দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে প্রায় নয়টি জেলায় এখন শিল্পকলা একাডেমির নিজস্ব কোনো ভবন নেই। সেখানে ভবন নির্মাণ করতে হবে। এছাড়াও শিল্পকলা একাডেমিতে তীব্র জনবল সংকট রয়েছে। তা দূর করতে দ্রুত জনবল নিয়োগের সুপারিশ করেছে সংস্কৃতি বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদের ‘সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি’র বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়।
কমিটির সদস্য অসীম কুমার উকিল বলেন, শিল্পকলা একাডেমিতে জনবলের তীব্র সংকট রয়েছে। তা সমাধানের সুপারিশ করেছি আমরা। কয়েকটি জেলায় শিল্পকলা একাডেমির কাঠামো নেই। সে কাঠামো তৈরি করতে বলা হয়েছে।
কার্যবিবরণী থেকে জানা গেছে, শিল্পকলা একাডেমির সাতশ ২৬ পদের বিপরীতে একশ ৭৫টি পদ শূন্য। এর মধ্যে প্রথম শ্রেণির ৬৪টি, দ্বিতীয় শ্রেণির ১৫টি, তৃতীয় শ্রেণির ৬৮টি এবং চতুর্থ শ্রেণির ২৮টি পদ শূন্য রয়েছে। ঢাকা কার্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ৫৪টি পদ শূন্য এবং ১০টি জেলায় কালচারাল কর্মকর্তার পদ শূন্য রয়েছে। এ পদে নিয়োগ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়াও দেশের ৬৪টি জেলায় তিনশ ৮১টি পদের বিপরীতে ৯১টি পদ শূন্য রয়েছে।
জানা গেছে, ৬৪ জেলার মধ্যে ৯টি জেলা শিল্পকলা একাডেমির কার্যক্রম ভাড়া ভবনে চলছে। যেগুলোর নতুন ভবন নির্মাণ চলছে।
দেশের সাংস্কৃতিক কর্মীরা শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তন বিনা ভাড়ায় বরাদ্দ চেয়েছে। সেই বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।
কমিটির একজন সদস্য বলেন, সাংস্কৃতিক কর্মীদের দাবির প্রতি আমরা একমত যে, এটা বিনা ভাড়ায় কিংবা ছাড় দেওয়ার বিষয়ে। তবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি আমরা শিল্পকলা একাডেমির হাতে দিয়েছি। শিল্পকলা একাডেমির ডিজি দেশের বরেণ্য সাংস্কৃতিক কর্মীদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, বৈঠকে আমরা বলেছি যারা বিনা পয়সায় হল ভাড়া চান তারা কিন্তু আবার সরকারের প্রণোদনার জন্য তদবির করেন। এটা তাদের দ্বিমুখী আচরণ মনে হয়।
সংসদ সচিবালয় থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে ৬৪টি জেলার শিল্পকলা একাডেমির বর্তমান অবস্থার বিষয়ে অবহিত করা হয় এবং একাডেমির উপজেলা পর্যায়ে জনবল নিয়োগ সম্পর্কে বিগত বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
এছাড়াও চীনে তিন বছরের প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামে পাঠানোর জন্য অ্যাক্রোবেটিক শিল্পীদের বয়স নিরপেক্ষভাবে স্ক্যানিংয়ের একটি দল গঠন করে মন্ত্রণালয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পাঠানোর জন্য বৈঠকে শিল্পকলা একাডেমিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর আলাদা একটি সংস্তৃতিক অধিদফতর গঠনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানানো হয় বৈঠকে। বলা হয়, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন, তাদের সাংস্কৃতিক কার্যক্রম দেশে বিদেশে সুচারুভাবে তুলে ধরা এবং সর্বোপরি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডকে আরও যুগোপযোগী ও গতিশীল করার জন্য দেশের ৭টি নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটগুলোকে একীভূত করে একটি আলাদা অধিদফতর গঠনের কার্যক্রম চলমান আছে।
এছাড়া পাহাড়িদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য তাদের তৈরি পণ্য সামগ্রী কীভাবে বাজারজাত করা যায় এবং বিদেশে বিপণন করা যায় সে সম্পর্কে মন্ত্রণালয়ে পরিকল্পনা প্রস্তাব পাঠানোর সুপারিশ করা হয়। বৈঠকে নেত্রকোণার বিরিশিরিতে অবস্থিত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমিকে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জীবন ও তাদের অমূল্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বিষয়ক গ্রন্থের সমন্বয়ে একটি বইমেলা আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর সুপারিশ করা হয়।
কমিটির সভাপতি সিমিন হোসেন রিমির সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও অংশগ্রহণ করেন সদস্য সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, আসাদুজ্জামান নূর, অসীম কুমার উকিল, সুবর্ণা মুস্তাফা।
অনলাইন ডেস্ক







