১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি কলকাতার ৮ নম্বর নাকতলা রোডে জন্মগ্রহণ করেন চিত্রনায়ক রাজ্জাক। ১৯৬৪ সালের ২৬ এপ্রিল শরণার্থী হিসেবে ঢাকায় পাড়ি দেন তিনি। এক জীবনে বাংলা চলচ্চিত্রে নায়করাজ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন রাজ্জাক। আজ ২১ আগস্ট, তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীতে আমরা স্মরণ করছি তাঁর অসাধারণ জীবনকাহিনী।
রাজ্জাকের প্রতিষ্ঠানের লোগোতে ল্যাম্পপোস্টের নিচে বসে থাকা একজন মানুষের ছবি দেখা যায়, পাশে একটি ডাস্টবিন। এ লোগোটি প্রতীকী। সন্তান বাপ্পারাজের স্মৃতিতে, ১৯৬৪ সালে বাবা শূন্য থেকে জীবন শুরু করেছিলেন। ঢাকায় প্রথম পৌঁছে আমাদের নিয়ে স্টেডিয়ামের একটি ল্যাম্পপোস্টের নিচে বসে ছিলেন। সেই ল্যাম্পপোস্টের নিচ থেকেই নতুন জীবন শুরু হয়েছিল। লোগোটি তাই সেই নতুন শুরুকে চিত্রিত করে।
রাজ্জাকের চলচ্চিত্র যাত্রা শুরু হয়েছিল ছোট ছোট এক্সট্রা চরিত্র দিয়ে। কলকাতার রতন লাল বাঙালি, পঙ্ক তিলক, শিলালিপি ছবিতে অল্পসংখ্যক সংলাপের চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। ঢাকায় তাঁর প্রথম অভিনয় আখেরি স্টেশন ছবিতে সহকারী স্টেশনমাস্টার চরিত্রে। তবে বেহুলা ছবিতে নায়ক হয়ে তিনি দর্শক হৃদয়ে অমর হয়ে ওঠেন।
জীবিকার তাগিদে টেলিভিশন নাটকে কাজ করতেন রাজ্জাক। অল্প আয়ের মধ্যে সংসার চালাতে নানা সংগ্রাম করতে হয়। তিনি নিজেই এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, সপ্তাহে ৬৫ টাকা পেতাম। সেই টাকাতেই সংসার চলে। তবু স্বপ্ন হারাননি। এক্সট্রা চরিত্র থেকে শুরু করে পরিশ্রমের ফলস্বরূপ তিনি বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে এক নায়ক হয়ে ওঠেন।
রাজ্জাক পরিচালনায় তৈরি কয়েকটি ছবিও জনপ্রিয়তা পেয়েছে, যেমন আয়না কাহিনী, সন্তান যখন শত্রু। তাঁর নায়িকাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কবরী, শাবানা, ববিতা, শবনম, রোজিনা। রোমান্টিক, সামাজিক ও সার্থক চলচ্চিত্রের মাধ্যমে রাজ্জাক চলচ্চিত্রপ্রেমীদের হৃদয়ে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
আজ তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীতে অনুরাগীরা সামাজিক মাধ্যমে স্মরণ করছেন নায়করাজকে। রাজ্জাকের জীবন একটি অনুপ্রেরণার গল্প—শূন্য থেকে শুরু করে চলচ্চিত্র জগতে চিরস্মরণীয় হয়ে ওঠা।
অনলাইন ডেস্ক/আর কে-০৮







