মাগুরায় আলোচিত শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ রোববার মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসানের আদালতে বাদীসহ তিনজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য হয়েছে আগামীকাল সোমবার।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চার আসামির উপস্থিতিতে শুনানি শুরু হয়। আসামিরা হলেন শিশুটির বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি, বোনের স্বামী ও ভাশুর। গত ২৩ এপ্রিল এই চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মনিরুল ইসলাম জানান, আজ বাদী এবং প্রথম দুইজন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। আগামীকাল মামলার ৩, ৪ ও ৫ নম্বর সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে।
মামলায় শিশুটির বোনের শ্বশুরের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(২) ধারায় (ধর্ষণের ফলে মৃত্যু) অভিযোগ আনা হয়েছে। অন্যদিকে বোনের স্বামী ও ভাশুরের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৫০৬ ধারার দ্বিতীয় অংশে (ভয়ভীতি প্রদর্শন) এবং শাশুড়ির বিরুদ্ধে ২০১ ধারায় (অপরাধের আলামত নষ্ট) অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।
আসামিদের আবেদনের ভিত্তিতে লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে সোহেল আহম্মেদ নামের এক আইনজীবীকে নিয়োগ দেওয়া হয়, যিনি আজ শুনানিতে আসামিপক্ষের হয়ে অংশ নেন। তিনি বলেন, বাদীর এজাহার ও পুলিশের অভিযোগপত্রের মধ্যে কিছু অমিল রয়েছে, যেমন ঘটনা রাতের বলে দাবি করা হলেও অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে সকালে ঘটেছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও মাগুরা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আলাউদ্দিন গত ১৩ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। এরপর ১৭ এপ্রিল মামলাটি ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয় এবং ২০ এপ্রিল অভিযোগপত্র গ্রহণ করা হয়।
উল্লেখ্য, ১ মার্চ শিশুটি বড় বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যায়। ৬ মার্চ সকালে তাকে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং ১৩ মার্চ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। শিশুটির মৃত্যুর পর এলাকাবাসীর উত্তেজনায় বোনের শ্বশুরবাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। মামলায় চার আসামিই বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।