Saturday, January 25, 2025

কাস্টমস কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ দাবির অভিযোগ, চুয়াডাঙ্গায় শ্রমিকদের বিক্ষোভ

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার মেসার্স বঙ্গ পিভিসি পাইপ ইন্ডাস্ট্রিজের মালিকের কাছে ৫০ লাখ টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগ উঠেছে যশোর এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনার রাকিবুল হাসান এবং তাঁর সহযোগী সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ অনুযায়ী, ঘুষ দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিক সেলিম আহমেদকে লাঞ্ছিত করা হয়। এ ঘটনার পর কারখানাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, ফলে শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিক অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন।

গত সোমবার দুপুরে মেসার্স বঙ্গ পিভিসি পাইপ ইন্ডাস্ট্রিজে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দুপুরে শ্রমিক-কর্মচারীরা চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। পরে তাঁরা স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেন এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে মানববন্ধন করে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।

সংবাদ সম্মেলনে শিল্পপ্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক হাফিজুর রহমান লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন। শ্রমিক-কর্মচারী প্রতিনিধি আমিনুর ইসলাম ও টিপু সুলতান সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। তারা অভিযোগ করেন, গত সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে অতিরিক্ত কমিশনার রাকিবুল হাসান ও সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সাদ্দাম হোসেনসহ ১২ সদস্যের একটি প্রিভেনটিভ দল তল্লাশির নামে ডাকাতের মতো আচরণ করেন। সেলিম আহমেদের কাছে ৫০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন এবং ঘুষ দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাঁকে লাঞ্ছিত করেন।

শ্রমিকদের অভিযোগ, অতিরিক্ত কমিশনার রাকিবুল হাসান সেলিম আহমেদের অফিস কক্ষে ঢুকে মূল্যবান কাগজপত্র তছনছ করেন এবং তাঁকে কক্ষ থেকে জোরপূর্বক বের করে দেন। এই ঘটনার পর মালিকপক্ষ প্রতিষ্ঠানটি স্থায়ীভাবে বন্ধের ঘোষণা দেয়।

অভিযোগ সম্পর্কে অতিরিক্ত কমিশনার রাকিবুল হাসান অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেন, ‘শিল্পপ্রতিষ্ঠানে আর্থিক অনিয়ম পাওয়া গেছে এবং ভ্যাট আইনে একটি মামলা করা হয়েছে। তবে সেখানে কোনো বাগ্‌বিতণ্ডা বা শারীরিক লাঞ্ছনার ঘটনা ঘটেনি।’ সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সাদ্দাম হোসেন এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দেননি।

মালিক সেলিম আহমেদ বলেন, ‘অতিরিক্ত কমিশনার রাকিবুল হাসান অফিসে ঢুকেই আমাকে ঘুষ দিতে বলেন। প্রথমে ৫০ লাখ দাবি করেন এবং পরে জানান ৩০ লাখের নিচে হবে না। আমি ঘুষ দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তিনি আমাকে গালাগালি করেন এবং শার্টের কলার ধরে টানেন। এই হয়রানি থেকে বাঁচতে আমি কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

আন্দোলনকারীরা দাবি করেন, অভিযুক্ত কাস্টমস কর্মকর্তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে এবং কারখানাটি চালুর উদ্যোগ নিতে হবে। পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে তাঁরা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রাস্তায় নেমে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেন।

এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সক্রিয় হস্তক্ষেপ ছাড়া সমস্যা সমাধানের সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে মনে করছেন শ্রমিকরা।

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর