Saturday, December 6, 2025

ভূমিদস্যু হঠাতে আসছে নতুন আইন

ভূমি সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, নাগরিক সেবা সহজীকরণে ভূমি ব্যবস্থাপনা ও সেবা কার্যক্রম অটোমেশন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে কল সেন্টার সেবা চালু হয়েছে। ১৬১২২ নম্বরে ফোন করেই জমির মালিক খতিয়ান ও ম্যাপের আবেদন করে খতিয়ান, নামজারি ফি ও ভূমি উন্নয়ন কর অনলাইনে দিতে পারছেন। সেবা গ্রহীতার ঠিকানায় ডাকযোগে পৌঁছে যাচ্ছে ভূমি সেবা।
এ কার্যক্রমের ফলে মোবাইল ফোনে আর্থিক সেবা চালুর মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে তাৎক্ষণিক ফি জমা দেয়া এবং ভূমি অফিসে না গিয়েই অনলাইনে ডিসিআর (ডুপ্লিকেট কার্বন রিসিট) পাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে ১৬১২২ নম্বরে ফোন করেই জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দিয়ে নামজারির আবেদন করতে পারবেন। প্রস্তুতি চলছে ডিজিটাল সার্ভের।
এটি হয়ে গেলে আর ভূমি জরিপের প্রয়োজন হবে না। ভূমি হাত বদলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে খতিয়ান ও ম্যাপ প্রস্তুত হয়ে যাবে। ফলে যুগ যুগ ধরে হয়রানি থেকে দেশের মানুষ রক্ষা পাবে। এসব সেবা চালুর ফলে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মচারীর ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ কমবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ই পর্চা, ই রেজিস্ট্রেশন, এলডি ট্যাক্স সিস্টেম, ভার্চ্যুয়াল শুনানি ও ডিজিটাল ব্যবস্থার সাথে সমন্বয় করা হবে। রোববার খুলনা বিভাগীয় প্রশাসনের আয়োজনে ‘ভূমি ব্যবস্থাপনা ও সেবা কার্যক্রম অটোমেশন’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ভূমি সচিব এসব কথা বলেন।
খুলনা জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে সকাল দশটায় কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ইসমাইল হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান সোলেমান খান। কর্মশালা সঞ্চালনা করেন খুলনার জেলা প্রশাসক মনিরুজ্জামান তালুকদার। বিষয় ভিত্তিক আলোচনা করেন খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) শহিদুল ইসলাম।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ভূমি সচিব মোস্তাফিজুর রহমান আরো বলেন, ভূমির প্রকৃত মালিকের স্বত্ত্ব ও অধিকার নিশ্চিতের পাশাপাশি অবৈধ দখল রোধে আইন করা হচ্ছে। এতে অন্যের জমির মালিক হতে জাল দলিল তৈরির পাশাপাশি মালিকানার চেয়ে বেশি দলিল করা, অতিরিক্ত জমি লিখে নেয়া, আগে বিক্রি বা হস্তান্তরের পরও গোপনে বিক্রি করা, বায়না করা জমি পুনরায় বিক্রি করতে চুক্তিবদ্ধ হওয়া কিংবা ভুল বুঝিয়ে দানপত্র তৈরিসহ উত্তরাধিকারীকে ঠকিয়ে নিজের অংশের চেয়ে বেশি জমি নিজের নামে দলিল করে নেয়ার মতো অপরাধগুলো বন্ধ হবে।

কর্মশালায় অনলাইন হোল্ডিং এন্ট্রি, ই নামজারি, ডিজিটাল রেকর্ড রুম অগ্রগতি ও বাস্তবায়ন বিষয়ক আলোচনায় অংশ নেন মাগুরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জুলিয়া সুকায়না, ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) রাজীবুল ইসলাম খান, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল জব্বার, ঝিনাইদহের শৈলকূপা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পার্থ প্রতিম শীল, মাগুরার মোহাম্মদপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) দবির উদ্দিন, সাতক্ষীরা পৌর ভূমি সহকারী কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম, খুলনার দিঘলীয়া সেনহাটি ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মাহমুদ প্রমুখ।
কর্মশালায় খুলনা বিভাগে অনলাইন গণশুনানিতে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ডাক্তার কাজী নাজিব হাসানের উদ্যোগ প্রশংসিত হয়। এ কার্যক্রম সম্প্রসারণের জন্য কর্মশালায় নির্দেশনা প্রদান করা হয় অন্যদের। অনুষ্ঠানে খুলনা বিভাগের দশজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), ৬০ জন সহকারী কমিশনার (ভূমি), প্রতি জেলা থেকে তিনজন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা ও তিনজন ইউডিসি উদ্যেক্তা অংশগ্রহণ করেন।
অনলাইন ডেস্ক
আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর