টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বাজাইল এলাকায় স্ত্রীর দাবি নিয়ে স্বামীর বাড়িতে গেলে এক তরুণী (২৭) গাছে বেঁধে নির্যাতনের শিকার হন। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলার হতেয়া রাজাবাড়ি ইউনিয়নের এই ঘটনায় স্থানীয়ভাবে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ও ছবি জনমনে ক্ষোভের জন্ম দেয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার ওই তরুণীর সঙ্গে পার্শ্ববর্তী গ্রামের আব্দুর রশিদের (২৪) প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্পর্কের এক পর্যায়ে তারা আদালতের মাধ্যমে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ে করেন বলে দাবি করেন তরুণী। বিয়ের পর একাধিক আত্মীয়ের বাড়িতে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে রাত কাটিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
তবে, বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে উঠতে চাইলে রশিদ এবং তার পরিবার সম্পর্ক অস্বীকার করেন। এরপর বৃহস্পতিবার স্বামীর স্বীকৃতি ও স্ত্রীর মর্যাদা চেয়ে বিয়ের কাগজপত্র নিয়ে রশিদের বাড়িতে গেলে তরুণীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করা হয়।
পরিবারের সদস্যরা খবর পেয়ে ওই তরুণীকে উদ্ধার করে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।
ভুক্তভোগী তরুণী বলেন, আমার কাছে কোর্ট ম্যারেজের কাগজপত্র, ছবি, ভিডিওসহ আরও অনেক প্রমাণ ছিল। কিন্তু তারা গাছে বেঁধে মারধর করে সব কেড়ে নেয়। আমাকে নির্যাতন করা হয়েছে শুধু স্ত্রীর স্বীকৃতি চাওয়ার জন্য।
অভিযুক্ত আব্দুর রশিদ তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওই নারীর সঙ্গে আমার মোবাইল ফোনে সম্পর্ক হয়েছিল। একদিন বেড়াতে গিয়ে সে ও তার লোকজন আমাকে আটকে ফোন ও টাকা কেড়ে নেয় এবং জোর করে উকিল দিয়ে কাগজে সই করায়। আজ সে আমার বাড়িতে এসে আত্মহত্যার চেষ্টা করছিল, তাই বাধ্য হয়ে তাকে বেঁধে রাখা হয়।
এই ঘটনার ভিডিও ও ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নিন্দার ঝড় ওঠে। নেটিজেনরা বলেন, এটা শুধু একটা নারীর প্রতি নির্যাতন নয়, এটা পুরো সমাজের বিবেকের ওপর আঘাত। তারা দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
সখীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম ভূঞা জানান, এখনো কোনো পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।