শাহারুল ইসলাম রাজ: সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও ক্ষতিকর রঙ মিশিয়ে শিশুদের প্রিয় খাবার আইসক্রিম তৈরি হচ্ছে। আইসক্রিম উৎপাদনের জন্য আলাদা পরিবেশ ও নিয়মনীতি থাকলেও তা মানছেন না স্থানীয় কারখানা মালিকরা।
এভাবে তৈরিকৃত নিম্নমানের আইসক্রিম খেয়ে কোমলমতি শিশুরা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে। এসব আইসক্রিম মাছের ককসেটে ভরে মোটরভ্যান ও বাইসাইকেলে মাইক লাগিয়ে আকর্ষণীয় প্রচারের মাধ্যমে গ্রাম-পাড়া-মহল্লা, হাটবাজার এবং বিদ্যালয়ের সামনে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি আইসক্রিম বিক্রি হয় ৩ থেকে ৫ টাকায়। প্রচণ্ড তাপদাহে পিপাসা মেটাতে শিশুদের পাশাপাশি বড়রাও কিনছেন এই আইসক্রিম। ফলে নিয়মিতই আমাশয়, ডায়রিয়া, সর্দি-কাশিসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শত শত মানুষ।
গত সোমবার সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার গয়ড়া বাজারের পাশে চন্দনপুর প্রাইমারি স্কুলের সামনে একটি জরাজীর্ণ ঘরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে আইসক্রিম তৈরি হচ্ছে। আইসক্রিমের স্বাদ বাড়ানোর জন্য মেশানো হচ্ছে সেগারিন রঙ ও বিভিন্ন ধরনের ফ্লেভারের ক্ষতিকর রাসায়নিক। অপরিচ্ছন্ন বালতিতে খালি হাতে এসব উপকরণ মেশানো হচ্ছে, ঢাকনা হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে কাঠ। এমনকি হাউজে ব্যবহৃত পানিও অনেক দিন আগের। তৈরি করা আইসক্রিম চাঁচ থেকে তুলে অপরিষ্কার পাত্রে রাখা হচ্ছে।
কারখানার শ্রমিকদের জন্য নির্দিষ্ট পোশাক বা হ্যান্ডগ্লাভস নেই; জুতা পায়ে, ঘর্মাক্ত শরীরে সারাদিন কাজ করছেন তারা।
কারখানার পরিচালক ফারুক হোসেন স্বীকার করেন, “আমার কোনো ছাড়পত্র নেই। সবাই আইসক্রিম বানাচ্ছে, তাই আমিও বানাচ্ছি। সবাই বন্ধ করলে আমিও বন্ধ করব।”
কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্যানিটারি ইন্সপেক্টর শফিকুর রহমান বলেন, “আগে একবার এই কারখানায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা ও সিলগালা করে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। পরে জেলা ফুড অফিসে মুসুলিকা দিয়ে পুনরায় চালু করেছে।”
কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ জহুরুল ইসলাম জানান, অনুমোদনহীন ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে আইসক্রিম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।







