রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে কক্সবাজারে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক অংশীজন সংলাপের শেষ দিনে মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) বিদেশি কূটনীতিক, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, আন্তর্জাতিক সংগঠন এবং দেশের রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবির পরিদর্শন করেন।
শিবিরে তারা রোহিঙ্গাদের জীবনযাপন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, খাদ্য সরবরাহ ও মানবিক সহায়তা কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। বিশেষভাবে বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (ডব্লিউএফপি) পরিচালিত খাদ্য সরবরাহ কেন্দ্র, হাসপাতাল ও ইউএনএইচসিআরের স্যানিটারি ন্যাপকিন উৎপাদন কেন্দ্র ঘুরে দেখেন এবং রোহিঙ্গা পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, অংশগ্রহণকারীদের বাস্তব পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে উপলব্ধি করানোর উদ্দেশ্যে সরেজমিন পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়। তিনি সতর্ক করে বলেন, আন্তর্জাতিক অর্থায়ন বন্ধ হয়ে গেলে শিবিরগুলোতে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। এজন্য দাতা দেশ ও সংস্থাগুলোর কাছে অর্থায়ন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি।
কক্সবাজারে কর্মরত ডব্লিউএফপির প্রোগ্রাম পলিসি অফিসার শেখ রবিউল আলম জানান, বিদ্যমান তহবিল দিয়ে ডিসেম্বর পর্যন্ত খাদ্য সহায়তা দেওয়া সম্ভব হবে। কিন্তু নতুন অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি না থাকায় শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এদিকে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের উপস্থিতি পুরো কার্যক্রমকে আরও তাৎপর্যপূর্ণ করে তোলে। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি-সহ ১০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি সংলাপে অংশ নিয়ে বলেন, রোহিঙ্গা সংকট কোনো একক সরকারের সমস্যা নয়; বরং এটি জাতীয় ঐকমত্যের বিষয়।
বিদেশি কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করে এটিকে বৈশ্বিক মানবিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে অভিহিত করেন। তাদের মতে, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমন্বিত ও কার্যকর উদ্যোগ জরুরি।
উল্লেখ্য, কক্সবাজারের এ সংলাপ থেকে প্রাপ্ত সুপারিশ আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে উপস্থাপন করা হবে। আশা করা হচ্ছে, সেখানে থেকে সংকট সমাধানে নতুন দিকনির্দেশনা পাওয়া যাবে।
তিন দিনের এ সংলাপ শেষে রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবির পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে কক্সবাজার পরিণত হয়েছে বৈশ্বিক মানবিক কূটনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে।
অনলাইন ডেস্ক/আর কে-০১







