Friday, December 5, 2025

মোরেলগঞ্জে ৩শ বিঘা কৃষিজমিতে ঘের নির্মাণের অভিযোগ, জলাবদ্ধতায় ফসলহানি

মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট) প্রতিনিধি: বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার ৯ নম্বর বলইবুনিয়া ইউনিয়নের কুহারদাহ-নেহাল খালী এলাকায় প্রায় ৩০০ বিঘা ফসলি জমিতে মৎস্য ঘের নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার বিরুদ্ধে। প্রাকৃতিক পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে দেওয়ায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। এতে ব্যাপক ফসলহানির মুখে পড়েছেন কৃষকরা।

ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার বিকেলে এলাকাবাসী এক বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ঘের নির্মাণের সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ কালভার্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, ফলে জমিতে পানি জমে আছে। এতে ধানের চারা পচে যাচ্ছে এবং রোপণ ব্যাহত হচ্ছে। অনেক কৃষক অভিযোগ করছেন, জমির প্রকৃত মালিকদের সম্মতি ছাড়াই জোরপূর্বক জমি দখল করে ঘের নির্মাণ করা হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক নুরুল ইসলাম খান বলেন, “ঘেরের পানি আটকে রাখায় চারা রোপণ করতে পারছি না। কিছু জমির চারা নষ্ট হয়ে গেছে। আগে কখনো এই এলাকায় ঘের ছিল না—এবার জোর করে করা হচ্ছে।”

আরেক কৃষক চান মাতুব্বর বলেন, “আমার বরগা নেওয়া জমিতেও জোর করে ঘের তৈরি করা হয়েছে। বাধা দিলে মামলা ও হামলার হুমকি দেওয়া হয়।”

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া রাবেয়া খানম, শাহিনুর বেগম, মোশারফ মাতুব্বর ও মহারাজসহ একাধিক এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, জমি দখলের সময় স্থানীয়দের ভয়ভীতি দেখানো হয় এবং প্রতিবাদকারীদের চাপের মুখে ফেলা হচ্ছে।

তবে অভিযুক্ত মো. সাদিক শিকদার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমরা ১০৪ জন জমির মালিকের সম্মতি নিয়েই ঘের করেছি এবং ক্ষতিপূরণও দিয়েছি। ঘের ব্যবসায় শেয়ারের অংশ না পেয়ে কয়েকজন আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।”

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাবিবুল্লাহ বলেন, “কুহারদাহ-নেখালপুর গ্রামের জমির মালিকদের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। উভয় পক্ষকে ডাকা হয়েছে। বিষয়টি সমাধানে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।”

এলাকাবাসীর আশঙ্কা, দ্রুত প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ না হলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে। তারা কৃষিজমির স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে এনে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর দাবি জানান।

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর