কিয়ামতের ময়দানে প্রত্যেককে আল্লাহ তায়ালার সামনে নিজের আমলের হিসাব দিতে হবে। কেউ কঠিন হিসাবের সম্মুখীন হবে, আবার কেউ সহজেই আল্লাহর রহমতে পার হয়ে যাবে। এ দিনটি হবে ভয়াবহ ও কঠিন, কিন্তু মুমিনদের জন্য আল্লাহ তা সহজ করে দেবেন।
পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে—যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে, তাদের জন্য সহজ হিসাব হবে। তাদের আমলনামা ডান হাতে দেওয়া হবে এবং তারা জান্নাতের সুসংবাদ পাবে। তারা হৃষ্টচিত্তে নিজেদের পরিবার-পরিজনের কাছে ফিরে যাবে। তাদের সঙ্গে কঠোর জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে না—নিষিদ্ধ কাজগুলো কেন করেছে, কিংবা সেসব কাজের কী অজুহাত ছিল, এসব জানতে চাওয়া হবে না। যদিও গুনাহর কাজগুলোও তাদের আমলনামায় লেখা থাকবে, কিন্তু সেসব নেক আমলের তুলনায় সামান্য হবে, তাই আল্লাহ সেগুলো উপেক্ষা করে দেবেন এবং ক্ষমা করে দেবেন।
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন:
“যাদের প্রতি পূর্ব থেকেই কল্যাণ নির্ধারিত হয়েছে, তারা জাহান্নাম থেকে দূরে থাকবে। তারা এর ধ্বনি পর্যন্ত শুনবে না। তারা তাদের মনবাঞ্ছিত স্থানে চিরকাল থাকবে।”
— সূরা আল-আহকাফ, আয়াত ১৬
অন্যদিকে, অসৎকর্মশীলদের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে “সু-উল হিসাব” অর্থাৎ কঠিন হিসাবের কথা। যেমনটি বলা হয়েছে:
“যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির পরিবর্তে অন্যকে অভিভাবক বানিয়েছে, তাদের জন্য রয়েছে সু-উল হিসাব।”
— সূরা আর-রা’দ, আয়াত ১৮
আয়েশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
“কিয়ামতের দিন যার পূর্ণ হিসাব নেওয়া হবে, সে শাস্তি থেকে মুক্তি পাবে না।”
এ কথা শুনে আয়েশা (রা.) প্রশ্ন করেন, “কিন্তু আল্লাহ কি বলেননি— ‘সে হবে সহজ হিসাব’ (فَسَوْفَ يُحَاسَبُ حِسَابًا يَسِيرًا)?”
রাসূল (সা.) উত্তরে বলেন,
“এটি হচ্ছে কেবল উপস্থাপন—যাকে সহজ হিসাব বলা হয়েছে। কিন্তু যার প্রকৃত অর্থে পুরোপুরি হিসাব নেয়া হবে, সে আযাব থেকে রক্ষা পাবে না।”
— (সহিহ বুখারি: ৪৯৩৯, সহিহ মুসলিম: ২৮৭৬)
ধর্ম ডেস্ক







