Sunday, April 27, 2025

ইফতার মাহফিলে ‘সারপ্লাস বক্স’ ধারণা

ইফতারির প্লেটগুলো সুন্দরভাবে সাজানো, সঙ্গে নানা রকম খাবার ও পানীয়। তবে প্রতিটি প্লেটের সামনে রাখা ছিল একটি করে খালি কৌটা (বক্স), যার নাম দেওয়া হয়েছিল ‘সারপ্লাস বক্স’। বক্সের গায়ে লেখা ছিল, “প্রয়োজনে আপনার অতিরিক্ত খাবার সারপ্লাস বক্সে রাখুন।” এর মানে হলো, যিনি যে খাবারটি খেতে চান না বা কম খান, তিনি তা এই বক্সে রাখবেন। পরে এই অতিরিক্ত খাবার এতিম ও দুঃস্থদের দেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) খুলনায় একটি ইফতার মাহফিলে খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল হক শহীদ পরিবার, সাংবাদিক ও বিশিষ্টজনদের সম্মানে এ উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এখানে অতিথিদের অতিরিক্ত খাবার সংরক্ষণ করতে দেওয়া হয়েছিল ‘সারপ্লাস বক্স’। পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রায় ৪০টি সারপ্লাস বক্সে জমে ওঠে প্রায় ১০০ শিশুর জন্য যথেষ্ট খাবার। ইফতারির পর, ডিআইজি রেজাউল হক তার গাড়িতে করে সেই খাবার খুলনা সদর এলাকার একটি এতিমখানায় নিয়ে যান। সেখানে ওই খাবারের মাধ্যমে এতিমদের রাতের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।

ডিআইজির এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ খুলনার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। তারা বলছেন, এমন উদ্যোগ ইফতার মাহফিলে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এর মাধ্যমে খাবার অপচয় কমে গিয়ে দরিদ্র মানুষ এবং পথশিশুদের জন্য সহায়ক হতে পারে।

খুলনা জেলা ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এবং দৈনিক যুগান্তরের ব্যুরো প্রধান আহমদ মুসা রঞ্জু বলেন, “এটি নিঃসন্দেহে একটি মহৎ উদ্যোগ। এটা শুধুমাত্র খাবার অপচয় রোধ করবে না, বরং দরিদ্রদের খাবারের প্রয়োজনও পূরণ করবে।” খুলনা প্রেস ক্লাবের নির্বাহী কমিটির সদস্য ও একুশে টেলিভিশনের খুলনা প্রতিনিধি বলেন, “এ ধরনের উদ্যোগে অনুপ্রাণিত হয়ে সবার উচিত এরকম উদ্যোগ নেওয়া।”

ডিআইজি রেজাউল হক বলেছেন, “এই উদ্যোগটি নেওয়ার মূল কারণ ছিল যে, অনেকেই কিছু খাবার খেতে চান না। তাদের জন্য সারপ্লাস বক্সে খাবার রাখার সুযোগ দিয়েছি, যাতে তা পরে দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করা যায়।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, এ ধরনের উদ্যোগ আরও বেশি ইফতার মাহফিলে ছড়িয়ে পড়লে অনেক ভালো ফল পাওয়া যাবে।

এ উদ্যোগ নিঃসন্দেহে সমাজে এক নতুন প্রথা প্রতিষ্ঠা করতে পারে, যেখানে খাবার অপচয় রোধ এবং সামাজিক দায়িত্ববোধকে গুরুত্ব দেওয়া হয়।

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর