Wednesday, March 26, 2025

রোজা ভঙ্গের কারণ ও কিছু গুরুত্বপূর্ণ মাসআলা

রমজান মাসে রোজা অবস্থায় কিছু কাজ করলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়। আবার কিছু ক্ষেত্রে রোজা নষ্ট হয় না। নিচে কোরআন ও হাদিসের আলোকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হলো—

১. স্বামী-স্ত্রীর মিলন

স্বামী-স্ত্রী মিলিত হলে রোজা ভঙ্গ হয়। রমজানের শুরুতে রাতেও সহবাস নিষিদ্ধ ছিল, পরে আল্লাহ তাআলা রাতের জন্য অনুমতি দেন। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে—

রোজার রাত্রিতে তোমাদের জন্য স্ত্রী সহবাস বৈধ করা হয়েছে। তারা তোমাদের পোশাক আর তোমরা তাদের পোশাক। আল্লাহ জানতেন যে তোমরা আত্মপ্রতারণা করছ। তাই তিনি তোমাদের ওপর দয়া করেছেন ও তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করেছেন। অতএব, এখন তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের সঙ্গে সহবাস করতে পারো ও আল্লাহ তোমাদের জন্য যা বিধিবদ্ধ করেছেন, তা কামনা করো। আর তোমরা পানাহার করো, যতক্ষণ রাত্রির কৃষরেখা থেকে ঊষার শুভ্ররেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের কাছে প্রতিভাত না হয়। তারপর রাত্রি পর্যন্ত রোজা পূর্ণ করো। আর যখন তোমরা মসজিদে ইতিকাফে থাকো, তখন স্ত্রী সহবাস কোরো না। এ আল্লাহর সীমারেখা, সুতরাং এর ধারেকাছে যেয়ো না। (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৭)

২. ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা

যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করে, তবে তার রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে। রাসুল (সা.) বলেছেন— যে ব্যক্তির অনিচ্ছাকৃতভাবে বমি এসে যায়, তাকে ওই রোজা কাজা করতে হবে না। কিন্তু যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় বমি করবে, তাকে সেই রোজা কাজা করতে হবে। (তিরমিজি: ৭২০)

৩. মুখ বা নাক দিয়ে কিছু পাকস্থলীতে পৌঁছানো

রোজা অবস্থায় মুখ দিয়ে কোনো কিছু পাকস্থলীতে গেলে তা পানাহার হিসেবে ধরা হবে এবং রোজা ভঙ্গ হবে। কোরআনে এসেছে, আর তোমরা পানাহার করো, যতক্ষণ রাত্রির কৃষরেখা থেকে ঊষার শুভ্ররেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের কাছে প্রতিভাত না হয়। তারপর রাত্রি পর্যন্ত রোজা পূর্ণ করো। (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৭)

এ ছাড়া নাক দিয়ে পানি প্রবেশ করালে সাবধান হতে হবে। নবী (সা.) বলেছেন— রোজাদার না হলে তুমি ভালোভাবে নাকে পানি দাও।

৪. চিকিৎসা সংক্রান্ত কিছু বিষয়

যেসব ইনজেকশন পানাহারের বিকল্প নয়, বরং চিকিৎসার জন্য দেওয়া হয়—যেমন ইনসুলিন, পেনিসিলিন কিংবা শরীর চাঙা করার জন্য টিকা—এসব রোজা ভঙ্গ করবে না। ইনজেকশন মাংসপেশিতে দেওয়া হোক বা শিরায়—এতে রোজার ক্ষতি হবে না। রক্তক্ষরণ হলে রোজা ভঙ্গ হবে না, কারণ এটি ইচ্ছাকৃত নয়। দাঁত তোলা, ক্ষতস্থান ড্রেসিং করা, রক্ত পরীক্ষা করা—এসব কারণেও রোজা ভঙ্গ হবে না।

উল্লিখিত মাসআলাগুলো কোরআন ও হাদিসের ভিত্তিতে নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে নেওয়া হয়েছে। রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করতে হলে এগুলো সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকা জরুরি।

ধর্ম ডেস্ক

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর