মিয়ানমারে বিদ্রোহীদের শক্তি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘর্ষে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলি দেশটির ৬০ শতাংশের বেশি এলাকা দখল করে নিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে সামরিক জান্তা সরকার। শুক্রবার রাতে এ তথ্য জানিয়েছে থাইল্যান্ডে নির্বাসিত মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নাগরিকদের পরিচালিত সংবাদমাধ্যম ‘ইরাবতী’।
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে এবং অং সান সু চির দল ‘ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি’র (এনএলডি) নেতৃত্বাধীন সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে সামরিক শাসন শুরু করে। এরপর থেকে দেশটিতে ক্রমাগত অস্থিরতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
২০২৩ সালের শেষ দিকে ‘তাঙ ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি’ (টিএনএলএ), ‘আরাকান আর্মি’ (এএ) এবং ‘মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি’র (এমএনডিএএ) সমন্বয়ে গঠিত ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’ সরকারবিরোধী অভিযান শুরু করে, যা ‘অপারেশন ১০২৭’ নামে পরিচিত। পরবর্তীতে বিদ্রোহে যোগ দেয় ‘চিন ন্যাশনাল আর্মি’ (সিএনএ), ‘চায়নাল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্স’ (সিডিএফ), ‘কাচিন লিবারেশন ডিফেন্স ফোর্স’ (কেএলডিএফ) এবং ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’ (এনইউজি)-এর সশস্ত্র শাখা ‘পিপলস ডিফেন্স ফোর্স’ (পিডিএফ)।
মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী স্বঘোষিত সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’ এবং বিদ্রোহীদের মদতপুষ্ট রাজনৈতিক দল ‘শান স্টেট প্রোগ্রেস পার্টি’ বিদ্রোহীদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। এছাড়াও, ‘দ্য ইউনাইটেড ওয়া স্টেট পার্টি’ (ইউডব্লিউএসপি) কয়েকটি প্রদেশে সমান্তরাল সরকার পরিচালনা করছে।
দেশটির সামরিক জান্তা সরকার ক্রমাগত চাপে পড়ছে এবং বিদ্রোহীদের অগ্রযাত্রা ঠেকাতে নতুন কৌশল গ্রহণের চেষ্টা করছে। তবে, সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে জনমত আরও শক্তিশালী হচ্ছে, যা মিয়ানমারের ভবিষ্যৎকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।