সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের রাজনৈতিক দল বাথ পার্টিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে দেশটির বর্তমান প্রশাসন। একইসঙ্গে সিরিয়ার সংবিধানও বাতিল করা হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সিরিয়ার সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনীসহ ছোট-বড় সকল সশস্ত্র গোষ্ঠীকে বিলুপ্ত করা হয়েছে। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় মিডিয়া জানিয়েছে, সাবেক বিরোধীদলীয় কমান্ডার এবং সিরিয়ার ডি ফ্যাক্টো নেতা আহমেদ আল-শারাকে দেশটির ক্রান্তিকালীন সময়ের জন্য প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা সানা জানিয়েছে, নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত আল-শারাকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, তাকে ক্রান্তিকালীন সময়ের জন্য একটি অস্থায়ী আইন পরিষদ গঠনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যা নতুন সংবিধান গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবে।
দামেস্ক থেকে আল জাজিরার সংবাদদাতা ওসামা বিন জাভেদ বলেছেন, “এটি একটি স্মরণীয় দিন। এটি দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে অস্পষ্টতা দূর করেছে, কারণ নতুন প্রশাসন কেমন হবে তা এখন কিছুটা স্পষ্ট হয়েছে।”
সিরিয়ার নিরাপত্তা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। দেশটির সেনাবাহিনী, নিরাপত্তা বাহিনীসহ সমস্ত সামরিক গোষ্ঠী বিলুপ্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে সাবেক বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)-কেও বিলুপ্ত করা হয়েছে। উল্লেখ্য, বাথ পার্টি ৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সিরিয়া শাসন করেছিল।
দামেস্কে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই পরিবর্তনের ঘোষণা দেওয়া হয়। গত ৮ ডিসেম্বর বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর যে সমস্ত কমান্ডাররা অংশ নিয়েছিলেন, তারা এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। আল-শারা তাদের আশ্বস্ত করেছেন যে, তারা নতুন সিরিয়ার একটি অংশ হবেন।
তবে কবে নাগাদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সে বিষয়ে এখনও কোনও নির্দিষ্ট সময়সূচি ঘোষণা করা হয়নি। আল-শারা আগে বলেছিলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশে একটি কার্যকর নির্বাচন আয়োজন করতে চার বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। এছাড়া, নতুন সংবিধান প্রণয়নে তিন বছর সময় লাগতে পারে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন আয়োজনের জন্য দেশে নতুন করে আদমশুমারি পরিচালনার প্রয়োজন। যেকোনো অর্থবহ নির্বাচনের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সিরিয়ার এই নতুন রাজনৈতিক পরিবর্তন দেশটির ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য কতটা কার্যকর হবে, তা সময়ই বলে দেবে।
অনলাইন ডেস্ক/আর কে-০২