হাফেজ হাবিবুল্লাহ: ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা। এই ব্যবস্থায় সর্বস্তরের মানুষের জন্য সুস্থ ও সুন্দর জীবন যাপনের নির্দেশনা রয়েছে। ইসলামে ঘুষকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কোরআন ও হাদিসে ঘুষের বিরুদ্ধে স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে।
কোরআনের দৃষ্টিতে ঘুষ:
আল্লাহ তা’আলা কোরআনে ঘুষ গ্রহণকারীদের সম্পর্কে বলেন, “তাদের অনেককে তুমি দেখবে পাপে, সীমালংঘনে ও অবৈধ ভক্ষণে তৎপর; তারা যা করে নিশ্চয় তা নিকৃষ্ট।” (সূরা মায়েদা : আয়াত ৬২)
এ আয়াত থেকে স্পষ্ট যে, ঘুষ গ্রহণ করা একটি বড় পাপ। এটি এক ধরনের অবৈধ ভক্ষণ। ঘুষ গ্রহণকারী ব্যক্তি আল্লাহর নির্দেশ লঙ্ঘন করে এবং নিজের আত্মাকে নষ্ট করে।
হাদিসের দৃষ্টিতে ঘুষ:
হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, “ঘুষদাতা ও গ্রহীতা উভয়ের উপর আল্লাহর লা’নত।”
এ হাদিস থেকে বুঝা যায়, ঘুষ দেওয়া এবং নেওয়া উভয়ই একটি বড় পাপ। এতে আল্লাহর অভিশাপ নাজিল হয়।
ঘুষের কুফল:
- সামাজিক অবক্ষয়: ঘুষের কারণে সমাজে অন্যায়, অবিচার ও দুর্নীতি বৃদ্ধি পায়।
- অর্থনৈতিক ক্ষতি: ঘুষের কারণে দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উন্নয়ন কাজে বাধা সৃষ্টি হয়।
- নৈতিক অবক্ষয়: ঘুষের কারণে মানুষের মধ্যে নৈতিকতা হারিয়ে যায়।
- ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে পাপ: ইসলামে ঘুষকে একটি বড় পাপ হিসেবে গণ্য করা হয়।
- সামাজিক সম্পর্ক নষ্ট: ঘুষের কারণে মানুষের মধ্যে বিশ্বাস ও আস্থা নষ্ট হয়।
ঘুষ থেকে মুক্তির উপায়:
- ইমানদার হওয়া: ইমানদার ব্যক্তি কখনো ঘুষ নেবে না।
- আল্লাহর ভয় করা: আল্লাহর ভয় থাকলে কেউ ঘুষ নিতে সাহস পাবে না।
- নৈতিকতা অর্জন করা: নৈতিকতা অর্জন করে মানুষ ঘুষ থেকে দূরে থাকতে পারে।
- সরকারি প্রশাসনে স্বচ্ছতা: সরকারি প্রশাসনে স্বচ্ছতা আনার মাধ্যমে ঘুষ নিরোধ করা সম্ভব।
- সচেতনতা সৃষ্টি: জনগণকে ঘুষের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতন করা।
ঘুষ একটি সামাজিক ব্যাধি। এটি সমাজকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়। ইসলামে ঘুষকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আমাদের সকলকে মিলে ঘুষের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।
আল্লাহ তা’আলা আমাদের সকলকে ঘুষ থেকে মুক্ত রাখুন। আমিন।