Wednesday, February 19, 2025

চার কুল ও আয়াতুল কুরসির আমল ও ফজিলত

চার কুল ও আয়াতুল কুরসি পবিত্র কুরআনের অসাধারণ সুরা ও আয়াত, যেগুলোর ফজিলত অসীম এবং যেগুলো নিয়মিত পাঠ করলে মুমিনের জীবন কল্যাণময় হয়ে ওঠে। এগুলো শুধুমাত্র মুমিনদের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করে না, বরং জিন, শয়তান এবং খারাপ মানুষের কুদৃষ্টি ও হিংসা থেকেও সুরক্ষা প্রদান করে। বিভিন্ন যাদু ও কুপ্রভাব থেকেও এই সুরাগুলোর আমল মুমিনকে রক্ষা করবে। ইনশাআল্লাহ!

চার কুল

চার কুল বলতে বোঝানো হয় সূরা এখলাস, সূরা আল ফালাক, সূরা নাস এবং সূরা কাফিরুন। এগুলোর বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ নিম্নে তুলে ধরা হলো:

সূরা এখলাস:

উচ্চারণ: ১. কুল হুওয়াল্লা-হু আহাদ। ২. আল্লা-হুসসামাদ। ৩. লাম ইয়ালিদ ওয়ালাম ইঊলাদ। ৪. ওয়া লাম ইয়াকুল্লাহূ কুফুওয়ান আহাদ।

অর্থ: ১. বল, তিনিই আল্লাহ, এক-অদ্বিতীয়। ২. আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী নন, সকলেই তার মুখাপেক্ষী। ৩. তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাকেও জন্ম দেওয়া হয়নি। ৪. আর তার কোনো সমকক্ষও নেই।

সূরা আল ফালাক:

উচ্চারণ: ১. কুল আ‘ঊযুবিরাব্বিল ফালাক। ২. মিন শাররি মা-খালাক। ৩. ওয়া মিন শাররি গা-সিকিন ইযা-ওয়াকাব। ৪. ওয়া মিন শাররিন-নাফফাসাতি ফিল-উকাদ। ৫. ওয়া মিন শাররি হা-সিদিন ইযা-হাসাদ।

অর্থ: ১. বল, ‘আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি ঊষার রবের কাছে। ২. তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তার অনিষ্ট থেকে। ৩. রাতের অন্ধকারের অনিষ্ট থেকে, যখন তা গভীর হয়। ৪. গিরায় ফুঁ-দানকারী নারীদের অনিষ্ট থেকে। ৫. হিংসুকের অনিষ্ট থেকে, যখন সে হিংসা করে।

সূরা নাস:

উচ্চারণ: ১. কুল আ‘ঊযুবিরাব্বিন্না-স। ২. মালিকিন্না-স। ৩. ইলা-হিন্না-স। ৪. মিন শাররিল ওয়াস ওয়া-সিল খান্না-স। ৫. আল্লাযী ইউওয়াসবিসুফী সুদূরিন্নাস। ৬. মিনাল জিন্নাতি ওয়ান্না-স।

অর্থ: ১. বলো, ‘আমি আশ্রয় চাই মানুষের রব। ২. মানুষের অধিপতি। ৩. মানুষের উপাস্যের কাছে। ৪. কুমন্ত্রণাদাতার অনিষ্ট থেকে, যে দ্রুত আত্মগোপন করে। ৫. যে মানুষের মনে কুমন্ত্রণা দেয়। ৬. জিন ও মানুষ থেকে।

সূরা কাফিরুন:

উচ্চারণ: ১. কুল ইয়াআইয়ুহাল কা-ফিরূন। ২. লাআ‘বুদুমা-তা‘বুদূন। ৩. ওয়ালাআনতুম ‘আ-বিদূনা মাআ‘বুদ। ৪. ওয়ালাআনা ‘আ-বিদুম মা-‘আবাত্তুম। ৫. ওয়ালাআনতুম ‘আ-বিদূনা মাআ‘বুদ। ৬. লাকুম দীনুকুম ওয়ালিয়া দীন।

অর্থ: ১. বলো, ‘হে কাফিররা! ২. তোমরা যার ইবাদাত কর আমি তার ইবাদাত করি না। ৩. এবং আমি যার ইবাদাত করি তোমরা তার ইবাদাতকারী নও। ৪. আর তোমরা যার ইবাদাত করছ আমি তার ইবাদাতকারী হব না। ৫. আর আমি যার ইবাদাত করি তোমরা তার ইবাদাতকারী হবে না। ৬. তোমাদের জন্য তোমাদের দীন আর আমার জন্য আমার দীন।

আয়াতুল কুরসি:

আয়াতুল কুরসি, পবিত্র কুরআনের দ্বিতীয় সূরা, আল-বাকারা-এর ২৫৫ নম্বর আয়াত। এটি ইসলাম ধর্মে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আয়াতগুলোর মধ্যে একটি।

উচ্চারণ: আল্লা-হু লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম। লা তা‘খুযুহু সিনাতুঁ ওয়ালা নাঊম। লাহূ মা ফিস্ সামা-ওয়াতি ওয়ামা ফিল আরদ্বি। মান যাল্লাযী ইয়াশফাউ‘ ই‘ন্দাহূ ইল্লা বিইজনিহি। ইয়া‘লামু মা বাইনা আইদিহিম ওয়ামা খালফাহুম, ওয়ালা ইউহিতূনা বিশাইয়্যিম্ মিন ‘ইলমিহি ইল্লা বিমা শা-আ‘। ওয়াসিআ‘ কুরসিইয়্যুহুস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদ্বি। ওয়ালা ইয়াউ‘দুহূ হিফযুহুমা ওয়া হুওয়াল ‘আলিইয়্যুল আ‘জিম।

অর্থ: আল্লাহ, যিনি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও বিশ্বচরাচরের ধারক। কোনো তন্দ্রা বা নিদ্রা তাঁকে পাকড়াও করতে পারে না। আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে সবকিছু তারই মালিকানাধীন। তাঁর হুকুম ব্যতিত এমন কে আছে যে, তাঁর নিকটে সুফারিশ করতে পারে? তাদের সম্মুখে ও পিছনে যা কিছু আছে সবকিছুই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসমুদ্র হতে তারা কিছুই আয়ত্ত করতে পারে না, কেবল যতুটুকু তিনি দিতে ইচ্ছা করেন তা ব্যতিত। তাঁর কুরসি সমগ্র আসমান ও জমিন পরিবেষ্টন করে আছে। আর সেগুলোর তত্ত্বাবধান তাঁকে মোটেই শ্রান্ত করে না। তিনি সর্বোচ্চ ও মহান।

চার কুল ও আয়াতুল কুরসির আমল ও ফজিলত

রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘প্রতিদিন ঘুমানোর আগে চার কুল পড়ে শরীরে ফুঁ দিলে সমস্ত বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫০১৭)

আয়াতুল কুরসি পড়া সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতিদিন ফজরের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করে, সারা দিন সে আল্লাহর নিরাপত্তায় থাকে।’ (নাসায়ি, হাদিস : ১০৫৬৯)

- বিজ্ঞাপন

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর