Saturday, December 6, 2025

ট্রাম্পের তৎপরতাকে কী চোখে দেখছেন গ্রিনল্যান্ডের বাসিন্দারা

দ্য গার্ডিয়ান: যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যে গ্রিনল্যান্ডসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। ট্রাম্প বলেছেন, গ্রিনল্যান্ডকে নিয়ন্ত্রণে নিতে তিনি শুল্ক আরোপ বা সামরিক শক্তি প্রয়োগ করতে প্রস্তুত। তার এই বক্তব্যের পর গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মিউট এগেদে সবাইকে শান্ত ও ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

মিউট এগেদে বলেন, “গ্রিনল্যান্ডের মালিক গ্রিনল্যান্ডবাসী। এটি কোনো সম্পত্তি নয়, যা কিনতে বা দখল করতে চাওয়া যায়। আমাদের স্বাধীনতা এবং পরিচয়ই আমাদের সম্পদ।”

ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পর যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিনল্যান্ড দখল করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।” এ বিষয়ে ফ্রান্স এবং জার্মানিও ট্রাম্পকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

গ্রিনল্যান্ডের ইতিহাস অনুসারে, এটি ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত ডেনমার্কের উপনিবেশ ছিল। বর্তমানে এটি একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল। ২০০৯ সালে ভোটের মাধ্যমে স্বাধীনতা দাবি করার অধিকার অর্জন করে। ট্রাম্প ২০১৯ সালেও গ্রিনল্যান্ড কিনতে চাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।

ট্রাম্পের এই মন্তব্যে গ্রিনল্যান্ডের সাধারণ মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ন্যুক শহরের বাসিন্দা ওলে হোর্থ বলেন, “আমাদের দেশ বিক্রির জন্য নয়। এটি আমাদের পরিচয় এবং ঐতিহ্যের অংশ।”

প্যাট্রিক আব্রাহামসেন, একজন অনুসন্ধান ও উদ্ধারকর্মী, বলেন, “গ্রিনল্যান্ডকে বস্তু বা সম্পত্তি হিসেবে বিবেচনা করা আমাদের পরিচয়ের প্রতি অসম্মান।”

শিক্ষক মালিনা বলেন, “আমরা ডেনমার্ক থেকেও আলাদা হতে চাই। তবে যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হওয়া আমাদের লক্ষ্য নয়। আমরা স্বাধীনভাবে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে চাই।”

গ্রিনল্যান্ডের প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার এবং স্বাধীনতার প্রশ্নে দেশটির জনগণ বিভক্ত। মনিতসকের শিক্ষার্থী ফ্রান্স পিটারসেন বলেন, “পুরোপুরি স্বাধীনতার আগে আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং শিক্ষিত কর্মশক্তির প্রয়োজন।”

ট্রাম্পের এই মন্তব্য শুধু গ্রিনল্যান্ড নয়, পুরো বিশ্বেই বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। দ্বীপটির ভবিষ্যৎ স্বাধীনতা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এখন আলোচনার কেন্দ্রে।

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর