ইসলামে সুন্দর নাম রাখার বেশ গুরুত্ব রয়েছে। সুন্দর নাম রাখার তাগিদ দিয়ে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, কেয়ামতের দিন তোমাদের নিজ নাম ও পিতার নামে ডাকা হবে। সুতরাং তোমরা সুন্দর নাম রাখো। (আবু দাউদ: ৪৩০০)
তাছাড়া সুন্দর নাম রাখা সন্তানের হক। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) ও আয়েশা (রা.) বর্ণিত হাদিসে রাসুল (স.) বলেছেন, ‘সন্তানের সুন্দর নাম রাখা ও তার উত্তম তরবিয়তের ব্যবস্থা করা বাবার ওপর সন্তানের হক।’ (মুসনাদে বাজজার (আলবাহরুজ জাখখার): ৮৫৪০)
এজন্য প্রতিটি বাবা মাকে লক্ষ রাখতে হবে সন্তানদের নাম যেন সুন্দর ও অর্থবহ হয়। নবীজির কাছে সবচেয়ে পছন্দের নাম দুটি। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.)-এর সবচেয়ে পছন্দনীয় নাম হলো আবদুল্লাহ ও আব্দুর রহমান। (মুসনাদে আহমদ: ৪৬৪)
এ দুটি নাম নবীজির পছন্দের কারণ হলো- নামগুলো সুন্দর অর্থ প্রকাশ করে। আবদুল্লাহ অর্থ আল্লাহর গোলাম বা বান্দা। আর আবদুর রহমান অর্থ হলো দয়াময় প্রভুর গোলাম। এভাবে আল্লাহর নামের সঙ্গে আবদ যোগ করলে যেকোনো নাম সুন্দর হয়। যেমন- আব্দুর রহিম, আব্দুল হাই, আব্দুল কাইয়ুম, আবদুল কাদির ইত্যাদি উত্তম নাম।
অনেকে না বুঝে সন্তানের ভুল নাম রাখে। যার কোনোটি অর্থহীন আর কোনোটি খারাপ অর্থ প্রকাশ করে। এরকম খারাপ অর্থের বা আপত্তিকর নাম পরিবর্তন করতে হবে। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘নবীজি (স.) মন্দ ও অসুন্দর নাম পরিবর্তন করে দিতেন।’ (জামে তিরমিজি: ২৮৩৯)
খেয়াল করতে হবে, সুন্দর ও মন্দ নামের প্রভাব ব্যক্তির চরিত্রেও পড়ে। (তাসমিয়াতুল মাওলুদ, পৃষ্ঠা- ১/১০; ইবনুল কাইয়্যেম, তুহফাতুল মাওদুদ, পৃষ্ঠা-১/১২১)
তাই নবী-রাসুলদের নাম এবং আল্লাহর ৯৯ নামের আগে আবদু যোগ করে নাম রাখাই উত্তম। কাফের মুশরিকের নামানুসারে এবং বিজাতীয়দের অনুসরণে সন্তানের নাম রাখা যাবে না। যেসব নামে বড়ত্ব ও অহংকার প্রকাশ পায় সেসব নামও অপছন্দ করতেন নবীজি। সন্তানের নাম মা-বাবার নামের সঙ্গে মিলিয়ে রাখা জরুরি নয়, বরং নামটি সুন্দর অর্থবহ হওয়াই গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নবীজির পছন্দের নামগুলো রাখার তাওফিক দান করুন। আমিন।
অনলাইন ডেস্ক/আর কে-০৫