Saturday, January 25, 2025

চালের বাজার অস্থির: আমদানি বাড়লেও দাম কমার লক্ষণ নেই

দেশে বর্তমানে চালের ভরা মৌসুম এবং ভারত থেকে শুল্কমুক্ত চাল আমদানিও চলছে পুরোদমে। গত এক মাসে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ৬ হাজার ৫৯৬ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে। তবে স্থানীয় বাজারে এর কোনো প্রভাব পড়েনি। যশোরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চালের দাম বরং কেজিপ্রতি ৩ থেকে ৫ টাকা বেড়েছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, চালের বাজারের স্থিতিশীলতার কোনো সম্ভাবনা আপাতত নেই। ধানের ভরা মৌসুমেও দাম বেশি থাকায় চালের দাম কমছে না। অনেক ক্রেতা আগের মতো চিকন চাল না কিনে বাধ্য হয়ে মোটা চাল কিনছেন, যা তাদের জন্য আর্থিক কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সরকার গত বছরের ৫ ডিসেম্বর থেকে চালের শুল্ক প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে এক মাসে বেনাপোল বন্দর দিয়ে চাল আমদানি হয়। তবে বেসরকারি পর্যায়ে অনুমতি পাওয়া ৯২টি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের অনেকেই নির্ধারিত সময়ে চাল আমদানি করতে পারেনি। ভারত থেকে দুই লাখ ৭৩ হাজার মেট্রিক টন সেদ্ধ চাল এবং এক লাখ ১৯ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হলেও প্রক্রিয়া ধীরগতিতে চলছে।

বেনাপোল বন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা আবু তাহের জানিয়েছেন, আমদানিকৃত চাল দ্রুত বাজারে ছাড়ার জন্য বন্দর এবং কাস্টমস যথাসম্ভব দ্রুত কার্যক্রম সম্পন্ন করছে। সরকার আমদানির সময়সীমা ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বৃদ্ধি করলেও এখন পর্যন্ত বাজারে এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে না।

যশোরসহ দেশের সিংহভাগ অঞ্চলে ধান উঠলেও এর দাম চড়া। কৃষকরা ধান মণে ১৩৫০ থেকে ১৪৫০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। এ অবস্থায় অটোরাইস মিল মালিকদের মতে, ধান কিনে মোটা চাল প্রস্তুত করতে ৫২ টাকা এবং চিকন চাল প্রস্তুত করতে ৬৩ থেকে ৭৩ টাকা পর্যন্ত খরচ হচ্ছে। ফলে বাজারে চালের দাম বাড়ছে।

যশোর বড় বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী কামরুল হোসেন জানিয়েছেন, মোটা চাল ৫২ টাকা, মিনিকেট ৬৫ থেকে ৭৫ টাকা এবং বাসমতি চাল ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ধানের মৌসুমে এবং আমদানি চলাকালে চালের দাম বাড়ার ঘটনা অস্বাভাবিক। তাদের মতে, সিন্ডিকেট বা বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের নজরদারি না থাকার কারণেই দাম কমছে না।

সরকার চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে শুল্কমুক্ত আমদানির সময়সীমা বৃদ্ধি করেছে। তবে বাজারে এর কার্যকর প্রভাব পড়েনি। আমদানি কার্যক্রম দ্রুততর হলেও ধানের চড়া দাম, আমদানি খরচ এবং বাজারে নজরদারির অভাব চালের দামে স্থিতিশীলতা আনতে ব্যর্থ হচ্ছে।

সাধারণ মানুষ আশাবাদী, প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিলে চালের বাজার স্বাভাবিক হবে এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যের দাম সাধারণ মানুষের নাগালে আসবে।

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর