করোনা মহামারির রেশ কাটতে না কাটতেই নতুন এক ভাইরাস নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে বিশ্বজুড়ে। এশিয়ার বিভিন্ন দেশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া হিউম্যান মেটোপনিউমো ভাইরাস (এইচএমপিভি) নতুন করে আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠেছে।
চীনে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়। এরপর জাপান, মালয়েশিয়া এবং হংকংয়ে সংক্রমণের খবর পাওয়া যায়। সর্বশেষ, ভারতে প্রথমবারের মতো এই ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বেঙ্গালুরুতে একদিনে দুটি শিশুর শরীরে এই ভাইরাস পাওয়া গেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এইচএমপিভি নতুন কোনো ভাইরাস নয়। ২০০১ সালে নেদারল্যান্ডসে ২৮ শিশুর শরীরে শনাক্ত হওয়া এই ইনফ্লুয়েঞ্জা ঘরানার ভাইরাস দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে আছে।
বাংলাদেশের আইইডিসিআরের সাবেক বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন জানিয়েছেন, এই ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট বা নিউমোনিয়ার উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক এবং গর্ভবতীদের ক্ষেত্রে এই ভাইরাস বাড়তি ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসির গবেষণা বলছে, এইচএমপিভি মূলত ফুসফুস ও শ্বাসতন্ত্রে আক্রমণ করে। এটি ইনফ্লুয়েঞ্জার মতোই সাধারণ উপসর্গ সৃষ্টি করলেও দীর্ঘমেয়াদি রোগে ভোগা ব্যক্তিদের জন্য জটিলতা বাড়িয়ে দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, সংক্রমণ রোধে মাস্ক ব্যবহার, নিয়মিত হাত ধোয়া এবং সংক্রমিত ব্যক্তিদের আইসোলেশনে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
চীনে শুরু হওয়া এই ভাইরাসের দ্রুত ছড়িয়ে পড়া এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশে শনাক্ত হওয়ায় বিশ্ব আবারও সতর্ক। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ভাইরাসের উপর নজরদারি এবং প্রস্তুতি অবলম্বনের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
বিশেষজ্ঞদের ভাষায়, “ভাইরাসের দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা বৃদ্ধি পেলে তা ভবিষ্যতে বড় ধরনের সংকট তৈরি করতে পারে। তাই সতর্কতাই এখন প্রধান প্রতিরোধ।”