বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মোসলেহ উদ্দিনের নাম বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়নি। মুক্তিযুদ্ধ–বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এখনো তাঁর নাম রয়েছে। স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলা এবং জাতীয় চার নেতা হত্যা মামলায় (জেলহত্যা নামে পরিচিত) দেশের সর্বোচ্চ আদালত এই খুনির মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করলেও রাষ্ট্র মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাঁর মর্যাদা বাতিল করেনি।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এতে নামের ভিড়ে ওই নাম চোখে পড়েনি, তাই হয়তো রয়ে গেছে। তবে দ্রুতই বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি মোসলেহ উদ্দিনের নাম তালিকা বাতিল থেকে বাদ দেওয়া হবে। তাঁর নামের সনদ ও গেজেট বাতিল করা হবে। মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, সেনা গেজেটে মোসলেহ উদ্দিন খানের নাম রয়েছে। তাঁর নামে গেজেট জারি করা হয় বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের শাসনামলে ২০০৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর। তাঁর বাবার নাম আব্দুল হক খান। জেলা নরসিংদী, থানা শিবপুর, গ্রাম দত্তেরগাঁও।
২০১৭ সালের আগস্ট মাসে চারজনের খেতাব ও সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু তিন বছর পরও এক খুনির নাম মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে সেনা মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় রয়ে গেছে।
এর আগে ২০১৭ সালে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার খুনির মুক্তিযুদ্ধের খেতাব ও সনদ বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই সময় মন্ত্রিসভার বৈঠকের জন্য তৈরি করা সারসংক্ষেপে বলা হয়, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় তাঁদের নাম থাকা জাতির জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট ও গেজেটে তখন পলাতক ছয় খুনির অন্যতম ক্যাপ্টেন নূর চৌধুরীর নামের সঙ্গে ‘বীর বিক্রম’, মেজর শরিফুল হক ডালিমের নামের সঙ্গে ‘বীর উত্তম’, রাশেদ চৌধুরীর নামের সঙ্গে ‘বীর প্রতীক’ ও মোসলেহ উদ্দিনের নামের সঙ্গে ‘বীর প্রতীক’ উপাধি ছিল।
এ নিয়ে ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে প্রথম আলো প্রতিবেদন প্রকাশের পর চারজনের খেতাব ও সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু তিন বছর পরও এক খুনির নাম মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে সেনা মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় রয়ে গেছে।
মোসলেহ উদ্দিনের নাম কীভাবে এখনো মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় রয়ে গেল, জানতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক গত সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই খুনির খেতাব, গেজেট ও সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। হয়তো চোখে পড়েনি, তাই বাদ যায়নি। কিন্তু এখন আমরা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগী হয়েছি। তবে বিষয়টি আসলেই অনেক দুঃখজনক ও লজ্জাজনক।’
তবে গতকাল মঙ্গলবার রাত আটটার সময়ও মোসলেহ উদ্দিনের নাম বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় (ওয়েবসাইটে) দেখা গেছে।‘আমরা মোসলেহ উদ্দিনের নামের গেজেট ও সনদ থাকার বিষয়টি জানতাম না। তবে জানার পর তা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করি দ্রুতই বাতিল হবে।জহুরুল ইসলাম, জামুকার মহাপরিচালক






