Friday, December 5, 2025

কপিলমুনিতে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ

কপিলমুনি (খুলনা) প্রতিনিধিঃ কপিলমুনিতে বিগত সরকারের আমলে এক যুবলীগ নেতা এলাকার মানুষের মধ্যে নাশকতা মামলার ভীতি ছড়িয়ে ব্যাপক চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে চালিয়েছে।

ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা হয়েছে। মামলা ও একাধিক অভিযোগে প্রকাশ, অতীত জীবনের নোংরা ও জঘন্য কাজের মধ্য দিয়ে উঠে আসা ব্যক্তিটি ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি নাছিরপুর গ্রামের আবু সাঈদ মোড়ল।

খুলনা-৬ আসনের সাবেক এমপি মোঃ রশীদুজ্জামানের নাম ভাঙ্গিয়ে সে এলাকায় ব্যাপক চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালায়। এমপি’র কাছের লোক হওয়ায় ভয়ে তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি। এমপির সাথে সেলফি তুলে এলাকায় প্রদর্শন করে রীতিমত তার অবস্থান সম্পর্কে জানান দিয়ে বাধাহীনভাবে চালিয়েছে তার অপকর্ম। তবে গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর সে কিছুদিন গাঁ ঢাকা দেয়। এরপর বেরিয়ে আসতে থাকে তার নানা অপকর্ম। তার দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা এবার মুখ খুলতে শুরু করেছে।

নাছিরপুর গ্রামের আয়েশা বেগম বলেন, ৩০ জুলাই সাঈদ হঠাৎ করে তার বাড়িতে এসে তার স্বামীকে নাশকতা মামলা দেওয়ার ভয় দেখিয়ে এক লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে, কাছে এত টাকা না থাকায় হাতে পায়ে ধরে অনেক কষ্টে ১৫ হাজার টাকা ম্যানেজ করে তাকে দেয়। ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে ২৫ জুলাই একই গ্রামের মজিদ গাজীর কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে নাশকতা মামলা দেওয়ার হুমকি দেয়, অবশেষে ১০ হাজার টাকা দিয়ে তার হাতে পায়ে জড়িয়ে ধরে। ফুটপাতের একজন গুড় ব্যবসায়ী বাসুদেব পালের কাছে চাঁদা দাবি করে, টাকা না দিলে এমপিকে বলে তার জায়গা থেকে দোকান উচ্ছেদ করে সেখানে টিউবঅয়েল বসানো হবে বলে জানানো হয়। বাসুদেব ২৫ বছর ধরে ওই একই স্থানে গুড়ের ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। উচ্ছেদের ভয়ে সাঈদকে ৮ হাজার টাকা দেয়। নাছিরপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেন খোকার পরিবার বিএনপির সমার্থক বলে নাশকতা মামলার ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নেয়। এছাড়াও স্বামী স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ, নিজস্ব সম্পত্তির উপর পাকা ইমারত তৈরিতে বাধা, এবং সরকারি কাজের বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ ধারণ করে প্রথমে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নিকট-আত্মীয় এবং বন্ধু-বান্ধবকে ভিডিও দেখায়, এরপর কোন সাড়া না মিললে সরাসরি সংশ্লিষ্ট ওই ব্যক্তিকে ভিডিও দেখিয়ে অর্থ দাবি করে। তার চাহিদা মোতাবেক অর্থ দিতে ব্যর্থ হলে ভিডিও প্রকাশ করে তাকে হয়রানি করে।

একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তাদেরকে প্রতিহত করার জন্য ৫ আগস্ট সকাল থেকে হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের বহিষ্কৃত সাঃ সম্পাদক মোসলেম উদ্দিন গাজী দয়াল ও সাঈদ এই দুই ব্যক্তি বাশেঁর লাঠি ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র একটি গোপন স্থানে জমা করতে থাকে। এদের দু’জনের হাতে এই ধরনের অস্ত্র দেখে মানুষ ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। হিন্দু-মুসলিম একই সহাবস্থানে থাকা কপিলমুনিতে হঠাৎ করে এদের দু’জনের কর্মকান্ডে এলাকাবাসীর মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে পড়ে। সাঈদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে তার বিরুদ্ধে পাইকগাছা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে কামরুল গাজী বাদী হয়ে বাংলাদেশ দন্ডবিধি ৩৮৫, ৩৮৭, ৩২৩, ৩০৭, ৩৭৯, ৩৫৪ ও ৫০৬ (২) ধারায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং সি আর ১১৭০/২৪। তাং ২১-০৮-২৪।

এবিষয়ে অভিযুক্ত সাঈদের বক্তব্য নেয়ার জন্য তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

 

আর কে-০৫

 

 

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর