Saturday, April 27, 2024

চুয়াডঙ্গায় ভাইরাসের আক্রমণে শুকিয়ে যাচ্ছে ভুট্টা গাছ

- Advertisement -

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি- চুয়াডাঙ্গায় ভুট্টা ক্ষেতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে ছত্রাকজনিত ফিউজারিয়াম স্টক রট নামের এক ধরনের ভাইরাস। গত কয়েক বছরের মধ্যে এবারই সবচেয়ে বেশি আক্রমণ করেছে ভাইরাসটি। এতে একরের পর একর ভুট্টা গাছ বিবর্ণ হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে, পচে যাচ্ছে শেকড়, গোড়া ও কাণ্ড। ওষুধ ও কীটনাশক স্প্রে করেও মিলছে না প্রতিকার। কৃষকের চোখে-মুখে হতাশার চিহ্ন।

কৃষি বিভাগের দাবি, ভাইরাস থেকে বাঁচতে সচেতনতার বিকল্প নেই। জেলায় এবার ৪৯ হাজার ৬৬৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টা উৎপাদন হয়েছে।

জানা গেছে, প্রতি বছরই ভুট্টা আবাদে শীর্ষে থাকে চুয়াডাঙ্গা জেলা। এবারও মাঠের পর মাঠজুড়ে চাষ হয়েছে ভুট্টার। কদিন বাদেই ক্ষেতের এ ভুট্টা কৃষকের ঘরে উঠবে। কিন্তু সবকিছু মলিন হয়েছে ফিউজারিয়াম স্টক রট নামে ভাইরাসের আক্রমণে। ফলন ও লাভ বেশি হওয়ায় অনেকেই বিভিন্নভাবে ঋণ নিয়ে আবাদ করেন। ফসল বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করেন। এখন ভুট্টার এ অবস্থায় ভুক্তভোগী কৃষকদের চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ।

সদর উপজেলার হায়দারপুর গ্রামের খড়ের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, এ মাঠে প্রায় আড়াই বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ করেন কৃষকরা। ক্ষেতের সবুজ ভুট্টা গাছ এখন বিবর্ণ। ধূসর শুকনো গাছে নেই ভুট্টার দেখা। চোখের পলকে ভাইরাস ছড়াচ্ছে এক মাঠ থেকে আরেক মাঠে। তাই রাগে ক্ষোভে গাছ কেটে ফেলছেন বেশিরভাগ চাষিরা।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হায়দারপুর গ্রামের কৃষক তেল সাজন জানান, গতবার চার বিঘাতে আড়াই লাখ টাকার ভুট্টা বিক্রি করেছিলেন। এবার বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ছয় বিঘায় ভুট্টার আবাদ করেছেন। আশা ছিল লাখ চারেক টাকায় বিক্রি হবে। কিন্তু এখন ভাইরাসের সংক্রমণে ভুট্টা ক্ষেত শুকিয়ে গেছে। যেখানে বিঘায় ৫০ থেকে ৭০ মণ ভুট্টা হয় সেখানে এখন ১০ মণও হচ্ছে না।

আরেক কৃষক শেখ লিটন বলেন, এবার চার বিঘা জমিতে ভুট্টা করেছি। একেক বিঘায় খরচ হয়েছে প্রায় ২০ হাজার টাকা। এ ছাড়াও রয়েছে জমি লিজের টাকা। চাষের শুরু থেকেই কৃষি অফিসের স্যারেরা যা বলেছে তাই করেছি। কিন্তু যখন ফলন আশা শুরুর পর থেকেই গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। এখন সব শেষ। দেড় লাখ টাকা কিস্তি তুলেছি। কী করবো জানি না।

কৃষকরা আরও জানান, এবার ভাইরাসের আক্রমণ ভেঙেছে অতীতের সব রেকর্ড। এ ভাইরাস চাষিদের কাছে এখনও নতুন। কীটনাশক ও ওষুধ স্প্রে করেও হয়নি প্রতিকার।

অভিযোগ আছে, এমন সংকটের সময়েও মাঠে দেখা মিলছে না কৃষি কর্মকর্তাদের। যদিও কৃষি বিভাগের দাবি, ভাইরাসজনিত এ রোগের হাত থেকে বাঁচতে চাষিদের নানাভাবে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এ জন্য কৃষকদের সচেতন হওয়ার আহ্বান তাদের।

এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কায়ছার ইকবাল বলেন, ভুট্টা গাছ লাগানোর সময় কৃষকরা যদি দূরত্ব না মানে সেক্ষেত্রে আক্রমণের মাত্রা বেড়ে যায়। আক্রমণের পর ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে। আমাদের পক্ষ থেকে ভুট্টা আবাদের শুরু থেকেই বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

- Advertisement -

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত