Friday, December 5, 2025

নড়াইলের নবগঙ্গা ও মধুমতীতে আকস্মিক নদী ভাঙনে বসতবাড়ি হারিয়ে দিশেহারা

নড়াইল প্রতিনিধি ।। নড়াইলের কালিয়ার নবগঙ্গা ও লোহাগড়ার মধুমতী নদীতে আকস্মিক ভাঙনে বসতবাড়ি হারিয়ে দিশেহারা কয়েক শত পরিবার।

লোহাগড়া উপজেলার জয়পুর ইউনিয়নের পার আমডাঙ্গা ও লোহাগড়া ইউনিয়নের ছাগলছিড়া গ্রামের প্রায় ৩শ পরিবারের ঘরবাড়ি মধুমতী নদীর কবলে বিলীন হয়ে গেছে। কালিয়া উপজেলার হামিদপুর ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর পূর্ব পাড়ায় আকস্মিক নদী ভাঙনে একটি সরকারি রাস্তাাসহ ১৫ থেকে ২০টি বসতবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। ভুক্তভোগী শফিকুল ও শ্যামলী দম্পতি জানান, অনেক কষ্টে টাকা জমিয়ে একটি পাঁকা ঘর করেছিলাম সন্তানদের নিয়ে বসবাস করব বলে। কিন্তু নবগঙ্গা নদী এক নিমেষে ধুলিস্যাৎ করে দিল আমাদের স্বপ্ন। ভিটা-মাটিটুকু কেড়ে নিয়ে আমাদের পথে বসিয়ে দিল। এখন সন্তানদের নিয়ে আমরা কোথায় যাব বলে কেঁদে ফেলেন। ভুক্তভোগী আরিফ জানান, রাত ১০টার দিকে টিউবওয়েল দিয়ে ঘোলা পানি আর কাঁদা বের হচ্ছিল। অতঃপর রাত ১১টার দিকে হঠাৎ করে গাছ-পালা ও ঘর বাড়ি দেবে যাচ্ছিল। সরানোর কোনো সুযোগ আমরা পাইনি। জয়পুর এলাকাবাসী জানান, তারা দীর্ঘ ৩ থেকে ৪ বছর মধুমতী নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে আছেন। জয়পুর ইউনিয়নের পার আমডাঙ্গা ও লোহাগড়া ইউনিয়নের ছাগলছিড়া গ্রামের প্রায় ৬শ পরিবার নদী ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে আছে। এই ভাঙন পায় ২ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। এর আগে ক্ষতিগ্রস্থ্যদের সরকার থেকে সাহায্য সহযোগিতা খুবই নগন্য দেওয়া হয়। এ বছর কোনো সরকারি সাহায্য সহযোগিতা দেওয়া হয়নি। এই এলাকার বাসিন্দারা এখন সর্বশান্ত। তাদের মাথা গোজার ঠাঁইও নেই। পার আমডাঙ্গা গ্রামের আ. সবুর খান, নুর আলম মাস্টার, সোহাগ মাস্টারসহ কয়েকজন বলেন, আমাদের গ্রামের শতবর্ষের মসজিদ-মাদরাসা, কবরস্থানসহ অসংখ্য ঘর-বাড়ি ও শত শত একর ফসলি জমি সর্বনাশা মধুমতি নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সহায় সম্বল হারিয়ে আমরা এখন পথে বসেছি। বর্তমান সংসদ সদস্য প্রায় দুই বছর আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, নদী ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু তা হয়নি। দ্রুত নদী ভাঙন রোধ ও ক্ষতিগ্রস্থদের পূনর্বাসনের দাবি জানাচ্ছি। এ বিষয়ে লোহাগড়া উপজেলার জয়পুর ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম সুমন বলেন, নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে ৮২ জনকে ১০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে। এছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড নদী ভাঙন রোধে ৭০ লাখ টাকা ব্যয় করেছে। এছাড়া স্থানীয় সংসদ সদস্যকে নিয়ে আমরা কয়েকবার ভাঙন কবলিত এলাকায় পরিদর্শন করেছি। নড়াইলের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল কুমার সেন বলেন, ২০২০/২১ অর্থ বছরে নদী ভাঙন রোধে ৭০ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়। কিন্তু সেটিও এখন নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে ওই এলাকার ভাঙনের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে পুনরায় নদী ভাঙন রোধে কাজ করা হবে। এ ব্যাপারে নড়াইলের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আসফাকুল হক চৌধুরী জানান, নদী ভাঙনে যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তাদেরকে পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।

রাতদিন ডেস্ক/জয়-১১

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর