যশোরে বিভিন্ন উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ নামে যে প্রতিষ্ঠান করা হয়েছে তার কোনো বৈধতা নেই। মুক্তিযোদ্ধা নাম ব্যবহার করে একটি চক্র নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির নামে সারাদেশের বিভিন্ন উপজেলা থেকে টাকা হাতানো শুরু করেছে। তার প্রধান হোতা প্রতিষ্ঠান পরিচালক মান্নান। বগুড়া থেকে তিনি সকল কিছু নিয়ন্ত্রণ করছেন। অবৈধ টাকার একটি অংশ চলে যাচ্ছে তারকাছে। মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলণের মাধ্যমে এ কথা জানান জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার রাজেক আহম্মেদ। তিনি বলেন, শুধু যশোর নয়, সারা বাংলাদেশে বিভিন্ন উপজেলায় এ ধরণের কর্মকান্ড চলছে। বিষয়টি নিয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সহ প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্শন করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, সারা দেশের ন্যায় যশোর সদরে মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের নাম ভাঙিয়ে প্রতিষ্ঠান প্রধান বগুড়ার আব্দুল মান্নান বিভিন্ন উপজেলায় নিয়োগ বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সরলতার সুযোগ নিয়ে মান্নান স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের একজনকে রাখছেন উচ্চপদে। তবে কর্তৃত্ব থাকছে তার পছন্দের কয়েকজনের হাতে। ঠিক তেমনটিই হয়েছে যশোরের ক্ষেত্রেও। যশোর মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল কলেজের সভাপতি করা হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা আইনুল হককে। এরপর প্রতারক মান্নান খুলনা বিভাগীয় কোঅর্ডিনেটর বানিয়েছেন জামাত নেতা রওশন আলম নামে একজনকে। এই রওশনই এ অঞ্চলের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি নড়াইল তুলরামপুরের আশার আলো কলেজের প্রিন্সিপ্যাল। তার নামে নাশকতা সহ সাতটি মামলা রয়েছে। জেলও খেটেছে রওশন। আর তার খালাতো ভাই বহুল বিতর্কিত ইদ্রিস আলমকে যশোর সদরের প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির সদস্য বানানো হয়েছে। মূলত ইদ্রিস আলমই নিয়োগের নামে অর্থবাণিজ্যে নেমেছেন। ইতিমধ্যে তিনি প্রিন্সিপ্যাল নিয়োগ দিয়ে ১২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। একইসাথে উপাধ্যক্ষ সুজয় কুমার সুরের কাছ থেকে নিয়েছেন পাঁচ লাখ ও প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষক নুরমোহাম্মদের কাছ থেকে আড়াই লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এছাড়া চাকরি দেয়ার কথা বলে, ঘোপের হামিমের কাছথেকে দেড় লাখ, কচুয়ার নিপুর কাছ থেকে তিন লাখ, একই এলাকার তবিবুর রহমানের কাছথেকে তিনলাখ, রসুল কাটির গনেশ পালের কাছথেকে পাঁচলাখ, ঘোপের কামাল ডাক্তারের কাছথেকে তিনলাখ, দিয়াপাড়ার আব্দুল্লাহর কাছথেকে দেড়লাখ, একই এলাকার জহিরের কাছথেকে একলাখ ও ইব্রাহিম মাস্টারের কাছথেকে ৯০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তারা। সদরের বাইরে মণিরামপুরেও একই অবস্থা। সেখানে প্রিন্সিপাল বানানো হয়েছে বড় ভাইকে আর ছোটভাইকে করা হয়েছে ভাইস প্রিন্সিপাল তারা নিয়োগের নামে অর্থ হাতাচ্ছেন। বাঘারপাড়াতেও একই ভাবে নিয়োগ বাণিজ্যে নেমেছন বলে অভিযোগ করেন মি.রাজেক আহম্মেদ। তিনি জানান, যশোর সদরে ইদ্রিস আলমের সাথে ওই এলাকার লাভলু লসকার, আব্দুল হামিদ, মহসিন আলী ও তোফায়েল আহম্মেদ এ নিয়োগ বাণিজ্যে লিপ্ত হয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের তদারকি প্রয়োজন। তাহলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে।
সংবাদ সম্মেলণে আরো উপস্থিত ছিলেন, বৃহত্তর যশোরের মুজিব বাহিনীর প্রধান আলী হোসেন মনি, সদরের ডেপুটি কমান্ডার আফজাল হোসেন দুদুল, মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, নুর মোহাম্মদ কুটি, সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল কলেজের সভাপতি আইনুল হক, প্রিন্সিপাল নুর মোহাম্মদ প্রমুখ।
বিশেষ প্রতিনিধি







