যশোর সদর উপজেলার রাজারহাট তেল পাম্প এলাকায় ছাত্রলীগ জনি সহ তার সহযোগিদের উপর হামলাকে কেন্দ্র করে মুড়লি রাজারহাট, রুপদিয়া সহ আশপাশের এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মামলা পাল্টা মামলা সহ নানা ধরণের অভিযোগ ছুড়াছুড়ি চলছে দুই গ্রুপের।এমতাবস্তায় দুই গ্রুপের মধ্যে চলছে উত্তেজনা।বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এমাতাবস্তায় প্রশাসনের উর্দ্বোতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সবাই। সূত্র জানায়, জনি আহতের ঘটনায় স্ত্রী মুড়লি খাঁ পাড়ার জনির স্ত্রী দোলা খাতুন শুক্রবার রাতে কোতোয়ালি খানায় একটি মামলা করেন। মামলায় প্রধান অভিযুক্ত করা হয়েছে সদর উপজেলার চাউলিয়া গ্রামের হাসেম মরজেলের ছেলে মর্তুজাকে। এছাড়া জিরাট গ্রামের আকবরের ছেলে আরমান, কচুয়া ঘাটকান্দা গ্রামের রবিউর ইসলামের ছেলে নয়ন, একই এলাকার মোকছেদের ছেলে রানা ও যশোর শহরের বারান্দী মোল্যাপাড়ার আল আমিনসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৬/৭জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিরা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে মামলার এজাহারে দোলা উল্লেখ করেন , স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আসামীরা দীর্ঘদিন ধরে জনিকে মারপিট খুন জখমের হুমকী দিয়ে আসছিল। গত ১৮ অক্টোবর জনিসহ সোহেল গাজী, রিয়াজ, সানিসহ আরো অনেকে যশোর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী নূর জাহান ইসলাম নীরার নির্বাচনী পোষ্টার বিতরণ করছিলেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় রাজারহাট এলাকার আমিন পেট্টোল পাম্পের পাশে যশোর মনিরামপুর রোডে অবস্থানকালে আসমিরা পুর্ব পরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র লোহার রড, কাঠের লাঠি জিআইপি পাইপ নিয়ে হামলা চালায়। হামলায় জনি গুরুতর আহত হয়। জনির সাথে থাকা অন্যদের উপরও চড়াও হয় সন্ত্রাসীরা। এসময় জনির পকেটে থাকা নগদ ৫০ হাজার টাকা, ১৫ হাজার ৭শ’ ৫০ টাকা মূল্যের চার্ট মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়া হয়। আহত জনি বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদিকে, জনি সহ তার সহযোগিরা আহত হলে তাদের যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে স্বজনেরা। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদও প্রকাশ হয়। এরপর বিষয়টি নজরে আসে সবার। এদিকে বিষয়টি নিয়ে মর্তুজা দাবি করেন , ব্যক্তি শত্রুতার জেরে মার খেয়েছেন জনি। পরে বিষয়টিকে রাজনীতিক উদ্দেশ্য হাসিলের চেষ্টায় পাশ্ববর্তী ইউনিয়নের কয়েকজন ছাত্রলীগের কর্মীদের ওপর বর্তানোর চেষ্টা করছে একটি মহল।এ ঘটনা মিথ্যা সম্পুর্ন ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য মূলক দাবি করেন তিনি।এছাড়া যশোরের একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে তিনি জানান, গত ১৮ অক্টোবর তিনি বসুন্দিয়া ইউনিয়নে স্বেচ্ছাসেবক লীগেল নির্বাচনী প্রচারণায় ছিলেন। যা বিভিন্ন ফেসবুক আইডিতে লাইভ ও হয়েছে দাবি তার। ঐদিন দুপুরের পর থেকেই সে নৌকা মার্কার বিজয়ের লক্ষ্যে নরেন্দ্রপুর এবং বসুন্দিয়ায় অবস্থান করেছেন। এদিকে, শুক্রবার রাতে মোর্তজা বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় নিজে একটি মামলা করেছেন। রুপদিয়া বাজারের নারকেল হাট এলাকায় সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হয়েছেন বলে মামলায় অভিযোগ করেন তিনি। হামলায় তার সাথে থাকা আরো ৭ জন গুরুতর আহত হয়েছেন ও তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা মোবাইল ও স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে দাবি করে মামলায় ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে। যশোর সদর উপজেলার জিরাট গ্রামের বর্তমানে তফসীডাঙ্গা বিদ্যুৎ অফিস এলাকার মৃত কওছার ড্রাইভারের ছেলে রাজু আহম্মেদকে এ মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে।এছাড়া চাউলিয়া গ্রামের সুরফ গাজীর ছেলে সাগর গাজী, গোপাল পুর গ্রামের আজিজারের ছেলে পিন্টু, চাউলিয়া গ্রামের সিদ্দিক হোসেনের ছেলে সোহেল,নরেন্দ্রপুরের দবির হোসেনের ছেলে সুমন, শাখারী গাতী গ্রামের মোখারফের ছেলে হাসান, শেখ সিদ্দিকের ছেলে শহিদুল ইসলাম, শাখারীগাতী রাস্তার মাথার মোয়েব, মথুরাপুর গ্রামের কাঞ্চনের ছেলে লালন রিয়াজ, গোপালপুর হাসানের ছেলে তন্ময় ও পদ্মবিলা গ্রামের মফিজুরের ছেলে রায়হানসহ অজ্ঞাতনামািআরো ৬/৭জনকে আসামি করেছেন তিনি।মামলায় মোর্তজার ভাষ্য, আসামিরা এলাকায় অপরাধ মূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। অপরাধীদের অপরাধমূলক কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে বলায় গত ২১ অক্টোবর সন্ধ্যা রাত ৭ টায় মর্তুজাসহ তার সহযোগী শাহীন আলম, সোহাগ সাহা, আরমান,রানা, রাজিব,নয়ন,হৃদয় সদর উপজেলার রুপদিয়া বাজারস্থ নারকেল হাট নামকস্থানে অবস্থান কালে রাজু আহম্মেদের হুকুমে আসামীরা আক্রমন শুরু করে। এ সময় নগদ ৯৪ হাজার ৫শ’ টাকা ৭৫ হাজার টাকা পরিমানের এক ভোরি স্বর্ণের চেইন ও ৩০ হাজার টাকা মূল্যের দু’টি মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় আসামিরা। এ দিকে মর্তুজার দায়েল করা মামলার প্রধান অভিযুক্ত রাজু আহম্মেদের ভাষ্য, আহত জনি তার আপন চাচাতো ভাই। জনির সাথে এলাকার একটি সন্ত্রাসী মহলের পূর্বশত্রুতার জের ধরে গুরুতর জখম হয়। তিনি নিজে হাসপাতালে জনিকে দেখতে গিয়েছেন। জনির পাশে দাড়িয়েছেন এটা সন্ত্রাসীরা সহ্য করতে পারেনি। ফলে ষড়যন্ত্রমুলক ভাবে তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, জনি এখন খুলনায় গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৫০১ নং বেডে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। ডাক্তার জানিয়েছেন জনির কিউনি বিকলের পথে। বিভিন্ন সময় জনির খোঁজ খবর সে রাখছেন যা সন্ত্রাসী মোর্তজা সহ অন্যদের সহ্য হচ্ছে না। ফলে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন তারা। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমুলক মামলা হয়েছে দাবি করে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, তিনি যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। এলাকায় তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। একটি পক্ষ রাজনৈতিক ভাবে তাকে ঘায়েল করতে এ ধরণের ষড়যন্ত্রের নীল নকশাঁ আটছেন। যা কখনোই মেনে নেয়া হবেনা। প্রয়োজনে আইনের আশ্রয় নেবেন বলেও জানান মি.জনি। এ বিষয়ে স্থানীয়রা বলেছেন, অভিযুক্ত রাজু ও মোর্তজা কয়েকদিন আগেও একই সাথে থাকতেন। চড়তেন একই গাড়িতে। কোকো এক কারণে তারা দুই মেরুর বাসিন্দা হয়ে যায়। শুরু হয় লবিং গ্রুপিং। সম্প্রতি জনির উপর হামলাকে কেন্দ্র করে রুপদিয়া, রাজারহাট,মুড়লি সহ আশপাশের এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। চলছে মামলা পাল্টা মামলা । এমতাবস্তায় যেকোনো সময় বড় ধরণের দূর্ঘটনার আশঙ্কাও করছেন কেউ কেউ। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের উর্দ্বোতন মহলে হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সবাই।
রায়হান উদ্দীন







