শফিয়ার রহমান, মণিরামপুরঃ ৩৭ জন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ইফটি’র (ইলেট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার) মাধ্যমে পেলেন অবসর সুবিধার অর্থ। শনিবার বিকেলে মণিরামপুর উপজেলার ভরতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রাপ্তি ও প্রত্যশা বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় অবসর সুবিধার টাকা বিতরন করেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অবসর সুবিধা বোর্ডের সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহম্মদ সাদী।
কোন ঝামেলা ছাড়া ডিজিটাল সুবিধায় এ অর্থ পেয়ে বেজায় খুশি অবসর প্রাপ্ত শিক্ষকরা। এসময় অবসর প্রাপ্ত শিক্ষকরা এমন উদ্যোগ নেওয়ায় শিক্ষাবান্ধব প্রধামন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অবসর বোর্ডের সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহম্মদ সাদী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার শিক্ষক কর্মচারীদের জাতীয়করণের কার্যক্রম শুরু করেছেন। প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার শিক্ষাবান্ধব। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা হলেন স্বপ্নের ফেরিওয়ালা। প্রধানমন্ত্রী স্বপ্ন রচনা করেন স্বপ্ন দেখান এবং সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেন। তাঁর দেখানো স্বপ্নের পথে বাংলাদেশের বেসরকারি লক্ষ লক্ষ শিক্ষকের দুর্দশা ও বিড়ম্বনা দূর করতে অবসর বোর্ড কাজ করছে। আজকের প্রধানমন্ত্রী শিক্ষক বান্ধব দরদী নেত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া অতীতে আর কেউ এমপিওভুক্ত বেসরকারি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের প্রতি সদয় দৃষ্টিতে তাকায়নি। তিনি আজ শিক্ষকদের কল্যাণে অর্থ বরাদ্দ দিচ্ছেন। ইতোমধ্যে ১৩ শত ৫৭ কোটি টাকা দিয়েছেন অবসর ভাতা প্রদানের জন্য।
শরীফ আহম্মদ সাদী আরও বলেন, বেসরকারি শিক্ষকরা এখন অবসরে গেলে তজবি জায়নামায নিয়ে বাড়ি যেতে হয়না। শিকরা বর্তমানে একটি পর্যায়ে চলে এসেছেন। তবে এখন থেকে আর যেন তেন শিক্ষকের দিন শেষ। আগে শিক্ষক-কর্মচারীগণ তাদের ন্যায্য পাওনার পিছনে দিনের পর দিন ঘুরতে হতো এবং ঘাটে ঘাটে নাজেহাল হতে হতো। এখন তাদের প্রাপ্য অর্থ নিজস্ব ব্যাংক একাউন্টে চলে যাচ্ছে।
অবসরের টাকা দেরিতে পাওয়ার কারন হিসেবে তিনি উল্লেখ করে বলেন, কর্মচারীদের প্রতিমাসে অবসরের চেক ছাড়তে প্রয়োজন ৯০ কোটি টাকা। সেক্ষেত্রে শিক্ষকদের কাছ থেকে কর্তনের টাকা প্রয়োজনের অর্ধেকও আসছেনা। এ অবস্থা নিরাসনের জন্য বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সমস্য সমাধানের জন্য ১৩ শত ৫৭ কোটি টাকা অবসর কল্যাণ ফান্ডে দিয়েছেন।
প্রধান শিক্ষক আব্দুল হামিদের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বরগুনা তালতলী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ গ্রন্থাগার সমিতির সভাপতি ড. মিজানুর রহমান। এ সময় বক্তব্য রাখেন, বালিয়াডাংগা খানপুর কলেজের অধ্যক্ষ আসাদুজ্জামান শাহিন, গোপালপুর স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ রিজাউল করিম, খামারবাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক নিমাই পাল, কুয়াদা ফাজিল মাদ্রাসার অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুল খালেক, কেশবপুর ডিগ্রী কলেজের গ্রন্থাগারিক আবুবক্কর সিদ্দিক প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ৩৭ জন অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীর মাঝে ইএফটি’র মাধ্যমে প্রায় ৫ কোটি টাকা বিতরণ করেন।
সচিব শরীফ আহম্মদ সাদী উপস্থিতি শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে আরও বলেন এ মন্ত্রণালয়ে এখন ঘুষ লেনদেনের দিন শেষ। আপনারা অবসরের টাকা নিয়মের মধ্য থেকেই বাড়িতে বসে পাবেন। কেউ যেন মধ্যসত্ত্ব ভোগীর কাছে যাবেননা। বর্তমান অবসরে যাওয়া শিক্ষক-কর্মচারীরা ২ বছর ১০ মাস পর অবসরের টাকা পচ্ছেন। আগামীতে ৬ মাসের মধ্যে অবসরের টাকা নিজ নিজ ব্যাংক একাউন্টে ইএফটির মাধ্যমে চলে যাবে বলে আশা করছি। মানবতার জননী শেখ হাসিনার হাত দিয়েই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের অবসর ভাতা প্রাপ্তির দীর্ঘ অপেক্ষার যন্ত্রণা দূর হবে।







