Saturday, December 6, 2025

রাজারহাট-চুকনগর মহাসড়ক সংস্কারে কোটি কোটি টাকার গাছ পচে নষ্ট হচ্ছে

শফিয়ার রহমান, মণিরামপুরঃ ডাবল লেনে উন্নীত করণে রাজারহাট-মণিরামপুর ভায়া চুকনগর পর্যন্ত প্রায় ৩৮ কিঃমিঃ মহাসড়কের দু’পাশের কোটি কোটি টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রজাতির সরকারি গাছ কেটে প্রায় ১বছর যাবত যত্রতত্র ফেলে রাখা হয়েছে। অথচ এখনও ওই গাছ বিক্রির জন্য দরপত্র (টেন্ডার) আহবান করা হয়নি। উপরোন্ত সড়কের পাশে ফেলে রাখায় রোদ বৃষ্টিতে অধিকাংশ গাছে পচন ধরেছে। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের কোন পদক্ষেপ চোখে পড়েনি। আর এ সুযোগে গাছ চুরির হিড়িক পড়েছে। এ কারনে সরকার কয়েক কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
জানাযায়, যশোরের রাজারহাট থেকে মণিরামপুর হয়ে চুকনগর পর্যন্ত প্রায় ৩৮ কিঃমিঃ মহাসড়কটি ডাবল লেনে উন্নিত করণে প্রায় ৯০ কোটি ৯২ লাখ ৭১ হাজার ৯৪৪ টাকা বাস্তবায়নের জন্য ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বরাদ্দ দিয়েছে। আর এটি বাস্তবায়ন করছেন সড়ক ও জনপদ বিভাগ। সড়ক প্রসস্থকরনের জন্য চারজন ঠিকাদার নিযুক্ত রয়েছে। ২০২০ সালের ২০ জুলাই একাজ শুরু হয়েছে আর সমাপ্ত করার কথা রয়েছে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বলে জানাগেছে। প্রায় ৩৮ কিঃমিঃ এ সড়কের দুপাশে রয়েছে মেহগনি, রেইন্ট্রি, রোডশিশুসহ বিভিন্ন প্রজাতের ছোটবড় কয়েক হাজার গাছ। যার আনুমানিক বাজার মূল্য চার কোটি টাকার উপরে। মহাসড়কটি ডাবল লেনে উন্নীত করতে রাস্তার দু’পাশের সব গাছ কেটে ফেলতে হবে। আর এজন্য প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে দরপত্র আহবানের। কিন্তু বিপত্তিঘটে গাছের মালিকানা নিয়ে। এ গাছের দাবিদার ছিল বনবিভাগ, জেলা পরিষদ এবং সড়ক ও জনপদ বিভাগ। তিন বিভাগের রশি টানাটানিতে গাছ কাটার জন্য কোন বিভাগই দরপত্র আহবান করতে পারেনি। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানরা কাজ করতে পড়ে মহাবিপাকে। ফলে বাধ্য হয়েই তারা (ঠিকাদার) সড়কের অধিকাংশ গাছ স্কেভেটর মেশিন দিয়ে উপড়ে যত্রতত্রভাবে ফেলে রেখেছে। এ সুযোগে অধিকাংশ গাছ লুটপাট হয়ে যায়। বর্তমান সড়কের পাশে যে গাছগুলো রয়েছে তার কোন ডালপালা নেই। আছে শুধু কান্ড ও মুড়ো। তার ওপর দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকায় রোদ বৃষ্টিতে অধিকাংশ গাছে পচন ধরে নষ্ট হতে চলেছে। এ দিকে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স কপোতাক্ষ কনষ্ট্রাকশনের প্রকল্প পরিচালক রানা জানান, সড়কের গাছ কর্তনে কর্তৃপক্ষের উদাসিনতায় তাদের কাজ সম্পন্ন করতে ব্যাপক হিমশিম খেতে হচ্ছে।
অবশ্য মণিরামপুর উপজেলা ও অতিরিক্ত দায়িত্ব কেশবপুরের বন কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা জানান, বন বিভাগের সংগ্রকৃত গাছের অধিকাংশ লটই দরপত্রের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়েছে। বাকি আছে কয়েকটি। তিনি জানান ইতোমধ্যে সড়কের গাছের মালিকানা নিয়ে সৃষ্ট সমস্যার সমাধান হয়েছে। বর্তমান গাছগুলোর একক মালিক জেলা পরিষদ। জেলা পরিষদের সার্ভেয়ার আল আমিন জানান, দরপত্র আহবানের জন্য ইতোমথ্যে গাছের পরিমাপ করা হয়েছে। যশোর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান জানান, গাছ বিক্রির দরপত্র আহবানের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে সকল কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। আশা করা হচ্ছে অচিরেই দরপত্র আহবান করা হবে।

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর