সুনামিপুলে কৃত্রিমভাবে সৃষ্ট সাগরের উত্তাল ঢেউয়ে লাইফ জ্যাকেট পরে উল্লাসে মেতেছে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র সাফির উল হক। ওর সঙ্গে মেতেছে আরও কয়েকজন শিশু-কিশোর। চারদিকে বাজছে ডিজে মিউজিক। মিউজিকের তালে তালে নানা বয়সের বিনোদনপ্রেমীরা সুনামিপুলে ভাসছেন। মনোমুগ্ধকর এমন দৃশ্য খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার বরণপাড়ার রানা রিসোর্ট অ্যান্ড অ্যামিউজমেন্ট পার্কে দেখা গেছে। শুক্রবার সরকারি ছুটি থাকায় দীর্ঘদিন ঘরবন্দি মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে এখানে এসেছেন। শহরের যান্ত্রিক কোলাহল থেকে সরে এসে একটু নিরিবিলি অবকাশ যাপনের জন্য অনেকে এসেছেন পরিবার-পরিজন নিয়ে। আবার কেউ কেউ এসেছেন বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে। পার্কে ঘুরতে আসা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক মো. সামিউল হক সাংবাদিকদের বলেন, দীর্ঘদিন ঘরবন্দি ছিল সবাই। যার কারণে বাচ্চারা হাঁপিয়ে উঠেছিল। তাদের একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস দিতে আমরা দুইজন অধ্যাপক পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছি। তিনি আরও বলেন, খুলনা শহরের কাছাকাছি যেতে চাইলে এর চেয়ে আদর্শ আর কোনো জায়গা হতে পারে না। এ পার্কের সবকিছুই অত্যন্ত পরিপাটি, সাজানো-গোছানো। খুলনার রানা রিসোর্ট অ্যান্ড এমিউজমেন্ট পার্কের জেনারেল ম্যনেজার বিল্লাল হোসেন বলেন, দীর্ঘ লকডাউনের পর মানুষ এখন একটু স্বস্তির জন্য পশুর নদের অববাহিকায় অবস্থিত এ পার্কে আসছেন। এখানে রয়েছে অত্যাধুনিক কটেজ, আধুনিক ও জনপ্রিয় রাইড সম্বলিত এমিউজমেন্ট পার্ক ও ওয়াটার কিংডম। এই পার্কে বিশেষ আকর্ষণ সুনামিপুল যা বাংলাদেশে প্রথম, যেখানে কৃত্রিমভাবে সৃষ্ট সাগরের উত্তাল ঢেউ এবং ওয়াটার স্লাইড ও ডিজে মিউজিক এবং বিভিন্ন আকষর্ণীয় রাইড ও বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে। এমিউজমেন্ট পার্কটিতে রয়েছে ক্যারোসেল, অক্টোপাস রাইড, নাগরদোলা, বাম্পার কার, সেল্ফ কন্ট্রোল্ড প্লেন, ট্রেন, ফ্লাইং কার, জাম্পিং ফ্রগ, লেডি বাগ, মোটর রাইড, কেবলকার, সুনামিপুল, ওয়াটার স্লাইড রাইন্ড। পার্কের প্রধান ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) রনজিৎ রায় বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সুন্দরবন সংলগ্ন এমিউজমেন্ট পার্ক খুলে দেওয়া হয়েছে। লকডাউন-পরবর্তী সময়ে ছুটির দিনগুলোতে ভিড় বেশি হচ্ছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত খোলা থাকছে পার্কটি। অন্যদিকে, রানা রিসোর্টের ন্যায় শিশুদের আনন্দ, চিৎকার, আর খুনসুটিতে পুরোদমে মজেছে হাদিস পার্ক, জাতিসংঘ শিশু পার্ক, সোলার পার্ক। শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় এসব পার্কে শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে তরুণ-তরুণীসহ নানা বয়সের মানুষ ভিড় করছেন। দীর্ঘ দিন পর খুলনা মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র শহীদ হাদিস পার্কে এসে মুগ্ধ হয়েছেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের খুলনা মহানগর কমিটির নেত্রী লুৎফুন্নাহার পলাশী। তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৮ মাস পর খুলনার পার্ক খুলেছে। দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকায় পার্কে মানুষের পা পড়েনি। এ সুযোগে প্রকৃতি মেলে ধরেছে অপরূপ ডানা। পার্কের খোলা জমিনে বেড়ে উঠেছে ঘাস, ফুটেছে নানা রকমের ফুল। দেখতে ভীষণ ভালো লাগছে। পলাশীর ন্যায় বিনোদনপ্রেমীরা পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে বেড়াতে আসছেন নগরীর পার্কগুলোতে। জাতিসংঘ শিশু পার্ক পরিবেশ উন্নয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাসান আহমেদ মোল্লা বলেন, দেড় বছর পর বৃহস্পতিবার পার্ক খুলেছে। শুক্রবার ছুটির দিনে খুলনার শিশু-কিশোর ও নানা বয়সী মানুষ পার্কে এসেছেন।
অনলাইন ডেস্ক







