Saturday, December 6, 2025

জনবল সংকটে ব্যাহত হচ্ছে মোরেলগঞ্জের কৃষি কার্যক্রম

মো.মাহাবুব আলম, মোরেলগঞ্জ  (বাগেরহাট)প্রতিনিধি:  বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ  উপজেলা একটি কৃষি প্রধান জনপদ। শস্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত এ উপজেলায় ধান চাষের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে সবজিরও চাষ হয়ে থাকে। বৃহত্তর মোরেলগঞ্জ উপজেলার ধান,  কলা, কাঁচা মরিচ, ক্ষীরা ও শসাসহ নানান রকম কৃষি পণ্য দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে করা হয় রফতানি। তবে এখানকার কৃষিতে ব্যাপক সফলতা অর্জন করার সম্ভাবনা থাকলেও মোরেলগঞ্জ  উপজেলা কৃষি অফিসের জনবল সংকটের কারণে তা অনেকটাই সম্ভব হচ্ছে না বলে বিভিন্ন এলাকার স্থানীয় কৃষকরা জানান। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার তৃণমূল পর্যায়ে কৃষিখাতকে শক্তিশালী করতে কৃষকদের বিভিন প্রণোদনা ও সুযোগ সুবিধা প্রদান অব্যাহত থাকলেও  শুধুমাত্র জনবল সংকটের কারণে তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে মোরেলগঞ্জ উপজেলা কৃষি বিভাগকে।এব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের কাাছ থেকেও জানা যায়। জনবল সংকটের কারণে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে কৃষি অফিসে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। ব্যাহত হচ্ছে দৈনন্দিন স্বাভাবিক কার্যক্রমও। এছাড়া কৃষক কার্ড থেকে শুরু করে সার, বীজ ও বিভিন্ন কৃষি উপকরণ কৃষকের মধ্যে বিতরণেও প্রতিনিয়ত বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। একটি পৌরসভা ও ১৬টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত বৃহত্তর  এ উপজেলা। এখানে মোট কৃষক পরিবার রয়েছে ৫১ হাজার ১৯৮ টি এবং  ৩০ হাজার ১৫০ হেক্টর আবাদযোগ্য জমি রয়েছে। মোরেলগঞ্জ  উপজেলা  দেশের প্রায় সর্ব দক্ষিণে  এবং অসংখ্য নদী-নালা, খাল-জলাশয়ের অবস্থান  এবং অনুন্নত  যোগাযোগ ব্যবস্থার সাথে এ দপ্তরের তীব্র জনবল সংকটে এখানকার ভূমি ব্যবস্থাপনা, বীজ, সার, কীটনাশকসহ ফসলের রোগবালাই, পোকা-মাকড় নিধন ও উন্নত ফলনশীল জাতের উৎপাদনে কৃষকদেরকে সেবা দিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি  হতে হচ্ছে উপজেলা কৃষি বিভাগকে।
উপজেলা কৃষি বিভাগ পরিচালনার জন্য  ৬২টি পদ থাকলেও এখানে কর্মরত আছেন মাত্র ২২ জন। বাকি ৪০টি পদই শূন্য রয়েছে।  শূন্য পদগুলো হল- কৃষি কর্মকর্তা একজন, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা দুইজন, সহকারি কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা একজন, উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা ৩৫জন, কম্পিউটার  অপারেটর  কাম মুদ্রাক্ষরিক একজন। এসব পদগুলো শূন্য থাকায় সেবামূলক প্রতিষ্ঠানটির সুফল ভোগ করতে পারছেন না উপজেলার ভুক্তভোগী কৃষক পরিবারগুলো। ফলে ফসল উৎপাদনে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন কৃষকরা।
উপজেলার ৫ নং রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন  কৃষক বলেন, আমাদের ইউনিয়নে ধান যেমন বেশি হয়, তেমনি নানা রকম শাকসবজিও বেশি উৎপাদিত হয়। কিন্তু কৃষি অফিসের লোকজনকে সময়মতো আমরা পাই না। একটি ইউনিয়নে  উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা  থাকার কথা তিনজন এখন আছেন একজন।  ১৬ টি ইউনিযনের কোন কোন ইউনিয়নে কেউ-ই নেই। তাই সব কাজ একজনকেই দেখভাল করতে হচ্ছে। একা কাজ করতে হিমশিম খেতে হয়। অনেক সময় শুক্রবার-শনিবার ছুটির দিন হলেও সকাল-সন্ধ্যা কৃষকের সঙ্গে কাজ করতে হয়- বললেন একজন উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা। মোরেলগঞ্জ  উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সিফাত আল মারুফ বলেন, জনবল সংকটের কারণে মাঠপর্যায়ে কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। ৪০ টি পদ শূন্য থাকায় সবাইকে অতিরিক্ত দ্বায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এ বিষয়ে ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে বলে তিনি জানান।
আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর