যশোরের কেশবপুর পৌরসভার আলোচিত-সমালোচিত মেয়র রফিকুল ইসলাম এবার বিস্ময়কর এক মামলা দায়ের করেছেন আদালতে। তার বিরুদ্ধে ডিস ব্যবসা দখল, দশ লাখ টাকা চাঁদা দাবি, জোর করে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়া এবং জীবন নাশের হুমকি দেয়ার অভিযোগ এনে একজনের করা সাংবাদিক সম্মেলনের খবর পত্রিকায় প্রকাশ করায় মামলায় বিবাদী করা হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের পাঠকপ্রিয় পত্রিকা দৈনিক গ্রামের কাগজ সম্পাদক ও প্রকাশক মবিনুল ইসলাম মবিনকে।
মেয়র রফিকুলের অভিযোগ কোনো প্রকার যাচাই না করে ইচ্ছাকৃতভাবে তার সম্মানহানির জন্যে গ্রামের কাগজে ওই সংবাদটি প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু, মেয়র নিজেই যে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে গ্রামের কাগজের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছেন তা গ্রামের কাগজে প্রকাশিত সংবাদ সম্মেলনের ওই প্রতিবেদনটি পাঠ করলে যে কেউই অনুধাবন করতে পারবেন। গতকাল যশোর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মেয়র রফিকুল ইসলামের দায়ের করা মামলার অপর বিবাদী কেশবপুর উপজেলার ব্রক্ষকাটি গ্রামের মৃত খন্দকার রফিকুজ্জামানের ছেলে খন্দকার মফিদুল ইসলাম। মূলত তিনিই ২৩ আগস্ট প্রেসক্লাব যশোরে মেয়র রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনটি করেছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি যে অভিযোগগুলো করেছিলেন তার সংবাদ প্রকাশ হয় পরের দিন ২৪ আগস্ট গ্রামের কাগজসহ যশোরের অন্যান্য পত্রিকায়। গ্রামের কাগজে প্রকাশিত সংবাদটিতে খন্দকার মফিদুল ইসলামের অভিযোগের ব্যাপারে মেয়র রফিকুল ইসলামের বক্তব্যও ছাপা হয়। ফলে গতকাল মেয়র তার দায়ের করা মামলায় গ্রামের কাগজ সম্পাদকের বিরুদ্ধে সত্য মিথ্যা যাচাই না করার যে অভিযোগ এনেছেন তা হাস্যকর।
এদিকে, সংবাদ সম্মেলনের খবর প্রকাশ করার বিষয় নিয়ে মেয়র রফিকুলের মামলা দায়েরের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন যশোরের সাংবাদিক সমাজসহ সচেতন মানুষ। সবাই তার দুরভিসন্ধি ও জ্ঞানবোধ নিয়েও রীতিমতো প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন। সাংবাদিক সম্মেলনের বিষয় নিয়ে সংবাদ প্রকাশের যেটুকু নিয়ম মানা প্রয়োজন পড়ে, তার সবটুকুই গ্রামের কাগজ মেনেছে অভিযুক্ত মেয়রের বক্তব্য ছাপার মাধ্যমে। কিন্তু শুধু গ্রামের কাগজকে টার্গেট করে উদ্দেশ্যমূলকভাবে মামলাটি করে হাস্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছেন। একইসাথে বিষয়টি নিন্দনীয়ও বটে।এদিকে, গ্রামের কাগজ সম্পাদক মবিনুল ইসলাম মবিনের বিরুদ্ধে কেশবপুরের মেয়র রফিকুল ইসলামের ষড়যন্ত্রমূলক মামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, সম্পাদক আহসান কবীর এবং যশোর সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি একরাম-উদ-দ্দৌলা ও সহসভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন। পৃথক বিবৃতিতে সাংবাদিক নেতারা বলেছেন, মেয়র কর্তৃক সংবাদপত্রের বিরুদ্ধে এই ধরনের মামলা স্বাধীন সাংবাদিকতার অন্তরায়। নেতৃদ্বয় এই ধরনের ঘৃণিত কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকার জন্য পৌর মেয়রের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
রফিকুল ইসলামের দায়ের করা মামলাটি তদন্ত করে পিবিআইকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন যশোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গৌতম মল্লিক।
বিশেষ প্রতিনিধি







