Friday, December 5, 2025

আদ-দ্বীনে ক্যানোলা খুলতে গিয়ে নবজাতকের আঙুল কেটে ফেললেন নার্স

কুষ্টিয়া আদ্-দ্বীন হসপিটালে ক্যানোলা খুলতে গিয়ে এক নবজাতকের বৃদ্ধাঙ্গুল কেটে ফেলেছেন সেবিকা। শুক্রবার সকালে এই ঘটনা ঘটে।
পরিবার জানায়, গত ২৭ জুলাই আদ্-দ্বীন হসপিটালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ওই নবজাতকের জন্ম দেন ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার বৃত্তিদেবী রাজনগর গ্রামের রফিকুল ইসলাম রানার স্ত্রী রিতু খাতুন।
আজ শুক্রবার ওই নবজাতকের বাড়ি যাওয়ার কথা ছিল। এজন্য সকাল সাড়ে ছয়টার সময় নবজাতকের ক্যানোলা খুলতে যান হাসপাতালটির সিনিয়র নার্স মমতাজ পারভিন। তিনি ক্যানোলার টেপ কাটতে গিয়ে নবজাতকের ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল কেটে দেহ থেকে আলাদা করে ফেলেন। পরে বাচ্চাটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রæত ঢাকা পাঠান আদ্-দ্বীন কর্তৃপক্ষ।
নবজাতকের বাবা রফিকুল ইসলাম রানা বলেন, ‘আমার স্ত্রী রিতুকে সিজারের জন্য গত ২৭ জুলাই ২১ তারিখে কুষ্টিয়া আদ্-দ্বীন হাসপাতালে ভর্র্তি করি। সেই দিন বিকেল সাড়ে পাঁচটায় কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। বাচ্চাটি কিছুটা অসুস্থ বলে সেই দিনই শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করতে পরামর্শ দেন চিকিৎসক। পরের দিন বাচ্চাকে মায়ের বেডে দিয়ে দেওয়া হয়। আজ শুক্রবার হাসপাতাল থেকে রিলিজ করার কথা ছিল। সেই মোতাবেক ভোর ছয়টার সময় বাচ্চাকে শিশু ওয়ার্ডে নিয়ে এক নারীকে দিয়ে ক্যানোলা খোলার সময় ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল কেটে দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে।’
নবজাতকের বাবা আরো বলেন, ‘প্রথম এক ঘণ্টা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গোপন রাখে। পরে তাদের আচরণ দেখে আমার বোন বুঝে ফেলে। আমি হাসপাতালের ম্যানেজারের সাথে কথা বললে তিনি রিলিজ করে সদর হাসপাতালে দেওয়ার চেষ্টা করে। আমি বাচ্চাকে ঢাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানোর অনুরোধ করলে তারা আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করে।’
‘এর মধ্যে বিভিন্ন গনমাধ্যম কর্মীরা চলে আসলে আদ্-দ্বীন কর্তৃপক্ষ বেলা ১১টার সময় আমার বাচ্চাকে ঢাকায় নেওয়ার ব্যবস্থা করে। আমরা দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থ গ্রহণ করবো,’ বলেন রানা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২০০২ সালে আদ্-দ্বীন থেকে ডিপ্লোমা কোর্স করেন নার্স মমতাজ পারভিন। এরপর থেকে তিনি বিভিন্ন জেলার আদ্-দ্বীন হসপিটালে সেবিকা হিসেবে কাজ করে আসছেন। ২০১৩ সাল থেকে মমতাজ পারভিন কুষ্টিয়া আদ্-দ্বীন হসপিটালে সেবিকা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
ফোনে জানতে চাইলে নার্স মমতাজ বলেন, ‘আমি বেশ সতর্ক অবস্থায় শিশুটির ক্যানোলার টেপ খুলছিলাম। কিন্তু কীভাবে যে এমন একটি ঘটনা ঘটলো! এ জন্য আমি খুবই অনুতপ্ত।’
‘এই ঘটনার পর থেকে আমি এক মুহূর্তের জন্যও স্বস্তি পাচ্ছি না। যেকোনো শাস্তি মাথা পেতে নিতে রাজি আছি। তবে হাসপাতালের যেন কোনো বদনাম না হয়,’ বলেন নার্স মমতাজ।
কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে মমতাজ পারভিনকে চাকরিচ্যুত করেছেন বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়া আদ্-দ্বীন হসপিটালের ম্যানেজার মো. রবিউল আউয়াল।
কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর