Friday, December 5, 2025

বঙ্গবন্ধুর ফুফু বাড়ির উন্নয়ন অব্যাহত রাখার আশ্বাস জেলা প্রশাসকের 

সৈয়দ নাইমুর রহমান ফিরোজ, নড়াইল প্রতিনিধিঃ নড়াইল সদর উপজেলার কামাল প্রতাপ গ্রামের ফুফু বাড়িতে আসতেন বঙ্গবন্ধু। সেই কামাল প্রতাপ গ্রামের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে চান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান।

আজ বুধবার (৩১ মার্চ) দুপুরে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বঙ্গবন্ধুর ফুফু বাড়ি ও বঙ্গবন্ধুর বাল্যকালের স্মৃতি বিজড়িত খেলার মাঠ পরিদর্শনে যান। সেখানে বঙ্গবন্ধুর আত্বীয় কাজী পরিবারের খোঁজ খবর নেন এবং  সাংবাদিকদের জানান, বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী পালনের জন্য জেলা প্রশাসন যে প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিল তারই অংশ হিসাবে কামাল প্রতাপ গ্রামে যাওয়ার যেসব রাস্তা এবং বঙ্গবন্ধু যে মাঠে ফুটবল খেলেছেন সেই মাঠের জন্য যা যা সংস্কার করা দরকার তা করা হবে।ফুফু বাড়ি কামাল প্রতাপ গ্রামে বেড়াতে আসতেন বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রীর নিকট সেই গ্রামের উন্নয়ন দাবি সম্বলিত খবর প্রকাশের পর নড়াইলের সাবেক জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা বেগম এই কামাল প্রতাপ গ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। 

আজ (৩১ মার্চ) জেলা প্রশাসক এর সাথে ছিলেন সহকারী কমিশনার এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আছিফ উদ্দিন মিয়া, শিবু দাস, মোঃ আনিসুর রহমান। আরো উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধুর আত্বীয় কাজী হাফিজুল করিম শিল্পী, তিতু কাজী, এস এম নাজিরুল ইসলাম পলাশ, খন্দকার সাইফুল ইসলাম প্রমূখ।উল্লেখ্য, ১৯২১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের (বঙ্গবন্ধুর পিতা শেখ লুৎফর রহমানের আপন মামাতো বোন) মামাতো ফুফু শেখ হায়াতুন্নেছার কামাল প্রতাপ গ্রামের কাজী আবুল হায়াত এর সাথে বিবাহ হয়। শেখ হায়াতুন্নেছা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার শেখ আব্দুল হকের কনিষ্ঠা কন্যা। তিনি নিজের ইচ্ছায় শেষ বয়সে ছোট মেয়ে বাগেরহাটের পৌরসভা এলাকার নূরজাহান বেগম রানীর বাসায় ছিলেন। নূরজাহান বেগম রানীর মেয়ে ফরিদা আক্তার বানু লুসির স্বামী অধ্যাপক মীর সাখাওয়াত আলী দাররু বাগেরহাট-২ আসনে ৩ বার আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯০ সালের ডিসেম্বর মাসে বাগেরহাটে রাজনৈতিক সফরকালে অসুস্থ শেখ হায়াতুন্নেছাকে দেখতে গিয়েছিলেন। শেখ হায়াতুন্নেছা ২০০১ সালের ৪ জানুয়ারী মৃত্যূবরণ করলে বাগেরহাটের খানজাহান আলী মাজারের কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।কামাল প্রতাপ গ্রামে যাওয়ার জন্য তিন দিকের রাস্তা এখনো কাঁচা এবং কিছু অংশ ইটের সলিং যার অবস্থা খুবই বেহাল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ফুফু শেখ হায়াতুন্নেছার ছোট দৌহিত্র কাজী হাফিজুল করিম শিল্পী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমাদের গ্রামবাসীর দাবি যেহেতু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই গ্রামে এসেছিলেন এবং স্কুলমাঠে ফুটবল খেলেছিলেন সেহেতু খেলার মাঠটি সংষ্কার করে বঙ্গবন্ধুর নামে নামকরন করে স্টেডিয়াম এবং খেলার মাঠ ও গ্রামে আসার রাস্তাগুলি পাকাকরণ করা হোক।এ ব্যাপারে কামাল প্রতাপ গ্রামের মুন্সি হাদিউজ্জামান স্মৃতিচারণ করে বলেন, ১৯৫১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের সাথে কামাল প্রতাপ স্কুলমাঠে ফুটবল খেলেছেন। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৩/৪ বার আমাদের কামাল প্রতাপ গ্রামে এসেছেন। তবে একবার এসে এক নাগাড়ে ৪দিন ছিলেন। বীরমুক্তিযোদ্ধা কাজী হাফিজুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ফুফু বাড়ি আমাদের গ্রামে হওয়ায় মাঝে মাঝে বেড়াতে আসতেন।বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ফুফু শেখ হায়াতুন্নেছার পাশের বাড়ির বৃদ্ধা মোছাঃ লতিফা আক্তার জানান, আমার শ^শুর বঙ্গবন্ধুর ফুফু হায়াতুন্নেছাকে বিয়ে দিয়ে এনেছিলেন এই গ্রামে। তিনি খুবই ভালো মানুষ ছিলেন। তিনি আরো জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শেখ হায়াতুন্নেছার বাড়িতে বেড়াতে এসেছেন। কামাল প্রতাপ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিত বলেন, বঙ্গবন্ধু এই স্কুলমাঠে ফুটবল খেলেছেন অথচ বর্তমানে খেলার মাঠটি খানা খন্দে খেলার অনুপযোগী। আমরা চাই মাঠটি সংস্কার করে বঙ্গবন্ধুর নামে নামকরণ করা হোক।আরো জানা যায়, কামাল প্রতাপ গ্রামের বঙ্গবন্ধুর ফুফু শেখ হায়াতুন্নেছার ছেলে কাজী নূরুল ঈমান (সইয়ুব) ও কাজী নুরুজ্জামান (আইয়ুব), কাজী সামছুজ্জামান (ছানু) এর সাথে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব ছিল। যে কারণে যখন বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলাসহ যে কোন রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের খবর কাজী নুরুজ্জামান আইয়ুব সন্ধ্যার পরে স্কুটারে করে এসে রেনু বুজির কাছে বলে যেতেন। তখন কাজী নুরুজ্জামান আইয়ুব ডিএসবি’র দারোগা ছিলেন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থাকা অবস্থায় মারা যান। কাজী নূরূল ঈমান (সইয়ুব) কামাল প্রতাপ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসাবে অবসর নিয়ে ২০১৩ সালে মারা যান। 

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর