চৌগাছা প্রতিনিধি: যশোরের চৌগাছায় একদিনে পৃথক ঘটনায় দুই স্কুলছাত্রী অপহৃত হয়েছেন বলে লিখিত অভিযোগ করেছেন তাদের অভিভাবকরা।
২৫ ফ্রেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার দুইটি অপহরণের ঘটনা ঘটে। অষ্টম ও নবম শ্রেণির ওই দুই শিক্ষার্থী উপজেলার হাকিমপুর ইউপির বকসীপুর গ্রামের ও সিংহঝুলী ইউপির মসিয়ূর নগর গ্রামের বাসিন্দা। দেবীপুর এবিসিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও সিংহঝুুলী শহীদ মসিয়ূর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তারা। রোববার দুপুরে চৌগাছা থানায় লিখিত অভিযোগ দেন ওই দুই স্কুলছাত্রীর বাবা।
লিখিত অভিযোগে উপজেলার সিংহঝুলী ইউপির মশিয়ূর নগর গ্রামের এক ব্যক্তি জানান, তার মেয়ে ও সিংহঝুলী শহীদ মসিয়ূর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রীকে তারই বড় মেয়ের স্বামী ঝিকরগাছা উপজেলার শ্রী চন্দ্রপুর গ্রামের নজির আহমেদের ছেলে ইমামুল হক গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে তার বাড়ির পাশের একটি ওয়াজ মাহফিলে নিয়ে যাওয়ার নাম করে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাকে বিয়ের প্রলোভনে ফুসলিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। এরপর থেকে স্থানীয়ভাবে চেষ্টা করেও তার কাছ থেকে ছোট মেয়ের উদ্ধার করতে না পেরে রোববার চৌগাছা থানায় লিখিত অভিযোগ দেন তার বাবা।
এ ঘটনায় তিনি তার মেয়ের জামাই ইমামুল হক ইমামুলের ভাই তৈয়ব আলী তাদের বাবা নজির আহমেদ এবং চৌগাছা উপজেলার সলুয়া গ্রামের শহিদুল ইসলামকে আসামি করে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অপর লিখিত অভিযোগে উপজেলার হাকিমপুর ইউপির বকসীপুর গ্রামের অপর ব্যক্তি দাবি করেন তার মেয়ে দেবীপুর বাজারের এবিসিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। করোনার সময়ে স্কুল বন্ধ থাকায় প্রতিদিন বিকেলে বাড়ি থেকে দেবীপুর বাজারে স্থানীয় জহুরুল ইসলামের কাছে প্রাইভেট পড়তে যেতো। প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার পথে আকাশ নামে এক যুবক প্রায়ই তাকে প্রেম নিবেদন করতো। তাতে সে রাজি না হওয়ায় মেয়েকে অপহরণ করবে বলে হুমকি দেয়। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বিকেলে সে বাড়ি থেকে প্রাইভেট পড়তে দেবীপুর বাজারে যায়। সেখান থেকে রাত হয়ে গেলেও বাড়ি না ফেরায় তারা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরবর্তীতে জানা যায়, দেবীপুর বাজার থেকে আকাশ তাকে ফুসলিয়ে অপহরণ করে নিয়ে গেছে। রোববার পর্যন্ত কোথাও মেয়ের সন্ধান না পেয়ে তিনি আকাশকে আসামি করে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অপহৃত ছাত্রীর বাবা ও মা চৌগাছা থানায় সাংবাদিকদের দুটি মোবাইল নম্বর দেখিয়ে বলেন, এই নম্বর দুটি থেকে একটি বা দুটি ছেলে তাদের বাড়িতে ব্যবহৃত মোবাইলে তার মেয়ের সঙ্গে কথা বলতো। তারা মেয়েকে মোবাইলে অপরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলতে নিষেধও করেছিলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরেও সেই নম্বর থেকে তাদের বাড়ির নম্বরে কল করলে তার মেয়ে কথা বলে।
তারা বলেন, এই মোবাইল নম্বর দুটি দিয়ে যারা কথা বলতো তারাই মেয়েকে অপহরণ করেছে। এই নম্বরে থানার একজন অফিসার ফোন করলে ওপ্রান্ত থেকে আকাশ বলে পরিচয় দিয়ে পরে কথা বলছি বলে রেখে দিয়েছেন। মেয়েটির মা-বাবা উভয়েই বলেন, তাদের মেয়ের আলাদা কোনো মোবাইল ফোন নেই। কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে তারা পুলিশের স্মরণাপন্ন হয়েছেন।
চৌগাছা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম সবুজ অভিযোগ দুটি পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অপহৃত মেয়ে দুই জনকে উদ্ধারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।







