‘আমারে নিয়ে যাইতা তাও ভালো এ তুমি কী করলে আল্লাহ।’ কথাগুলো বলছিলেন নারী কারারক্ষী আছিয়া। তিলতিল করে গড়ে তোলা সংসার এবং জমানো টাকা আর গহনা হারিয়ে তিনি এখন পাগলপ্রায়। শুক্রবার সকালে নিজের ঘরের দিকে তাকিয়ে কাঁদতে কাঁদতে নানা কথা বলেন এই নারী কারারক্ষী।
যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের মাজার সংলগ্ন পিসিআরের স্টাফ কোয়ার্টারে অগ্নিকান্ডে অর্ধকোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে কারাকর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। তবে, ঘটনার সূত্রপাত কোথা থেকে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার তুহিন কান্তি খান বলেন, এ ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির প্রধান করা হয়েছে ঝিনাইদহ জেলা কারাগারের সুপার আনোয়ার হোসেনকে। অপর দু’ সদস্য হচ্ছেন জেলার তুহিন কান্তি খান ও ডেপুটি জেলার তৌহিদুল ইসলাম। জেলার জানান, দুপুরে খুলনার কারা উপমহাপরিদর্শক ছগির মিয়া ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের লোকজনের সাথে বসেন। ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি পরিবারকে তাৎক্ষণিকভাবে ১০ হাজার টাকা করে দেয়া হয়েছে। একই সাথে দেয়া হয়েছে ৩০ কেজি চাল, পাঁচ কেজি ডালসহ প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী। ব্যবস্থা করা হয়েছে আসবাবপত্রেরও। ছয়টি পরিবারকে নতুন ছয়টি কোয়ার্টারে স্থানান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে ঝিনাইদহ কারাগারের সুপার জানান, তিনি তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন। এ সংক্রান্ত চিঠি শুক্রবার সন্ধ্যায় হাতে পান। রোববার তিনি ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে, সকালে জেলখানা এলাকায় শোকের মাতম শুরু হয়। কেউ কেউ পুড়ে যাওয়া প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রোদে শুকিয়ে সান্ত্বনা খোঁজার চেষ্টা করে। আবার কেউ কেউ কান্নায় ভেঙে পরে। কারাকর্মকর্তা-কর্মচারীসহ তাদের পরিবারের সদস্যরা এসে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সান্ত্বনা দেন। ঘটনার রাতে যশোর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান নুরজাহান ইসলাম নীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
রাতদিন সংবাদ







