সৈয়দ নাইমুর রহমান ফিরোজ, নড়াইল প্রতিনিধিঃ নড়াইল সদর উপজেলার সিঙ্গাশোলপুরে তিন মাসের বেশী একঘরে হওয়া ছাত্রলীগ নেতা সন্ত্রাসী হামলায় আহত আশিকের বাবা ইকরাম শেখ ও তার আত্মীয়-স্বজনদের হুমকি-ধমকি অব্যাহতরয়েছে। ইকরামের ৬টি জ্ঞাতি পরিবার ও প্রতিবেশী যারাই সম্পর্ক রাখছে তাদেরকেই হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
ইকরাম শেখ জানান, গত ১২ ডিসেম্বর তার ছেলে আশিককে মারধর করে জখমের মামলায় গত ১১ জানুয়ারী আমরা আদালতে যাই। প্রধান আসামি ইউপি চেয়ারম্যান ও তার লোকজন আদালতে জামিন পেয়ে আদালত চত্বরে এবং বাদি পক্ষের অ্যাডভোকেট বসিরুল হকের চেম্বারের মধ্যে আমাদের অকথ্যভাষায় গালিগালাজ করে এবং দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে ওই দিন সদর থানায় একটি জিডি করি।ইকরাম শেখের স্ত্রী রাবেয়া বেগম জানান, চেয়ারম্যানের হুমকির কারনে আত্মীয়-স্বজনরা আমাদের বাড়িতে আসা বাদ দিয়েছে। প্রকাশ্যে কথাও বলছে না। রাতের আঁধারে কেউ কেউ গোপনে এসে দেখা করে। কেউ মিশলে বা কথা বললে চেয়ারম্যান উজ্জল ও তার লোকজন তাদের হুমকি-ধমকি দেয়।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইকরাম শেখের এক আত্মীয় জানান, আশিককে জখমের পর তার খালাতো ভাই রেঞ্জার শেখ ও তারস্ত্রী হিরা বেগম আশিকদের বিপদে-আপদে খোঁজ-খবর ও সাহায্য সহযোগিতা করায় রেঞ্জারকে চেয়ারম্যান পক্ষের রবিউল
শেখ (২৭) ও রাজু বিশ্বাস (২৪) হত্যার হুমকি দেয়। এ ঘটনায় গত ডিসেম্বর মাসে সদর থানায় একটি জিডি করে। পরেচেয়ারম্যান তাকে বাড়িতে নিয়ে শারীরিকভাবে নির্যাতন করলে ভয়ে জিডি তুলে নিতে বাধ্য হয়।
সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পিযুষ বালা, সাংগঠনিক সম্পাদক হোসেন শেখ বলেন, আমাদেরকিছু করার নেই। শুনেছি উজ্জল শেখ আগে যুবদলের সাথে যুক্ত ছিল। সে কিভাবে সেচ্ছাসেবকলীগে গিয়েছে তা বলতে পারব না।সে তার মতো করে রাজনীতি করে। আমরা চেয়ারম্যানকে বিষয়টির মিমাংসার কথা বলেছি। এ ব্যাপারে প্রশাসনও নীরব।আশিকের বড়ো ভাই ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরিরত তরিকুল ইসলাম জানান, তার ছোট ভাই আশিকুল ইসলাম সদর উপজেলা
সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় তার জন্য কাল হয়েছে। সে চেয়ারম্যান উজ্জলের পক্ষেনা যাওয়ায় চেয়ারম্যান ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ত্রাসী দিয়ে কয়েকবার তাকে মারধর করার চেষ্টা করে। এ কারনে গত বছরের ১অক্টোবর আশিক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে হত্যা প্রচেষ্টার অভিযোগ এনে নড়াইল পুলিশ সুপার বরাবর একটি দরখাস্ত করে।বিষয়টি চেয়ারম্যান জানার পরদিন ২ অক্টোবর খলিশাখালী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এক গ্রাম্য সভা ডেকে তার পরিবারকেএকঘোরে করে। এর দু’মাস পর ১০ ডিসেম্বর আশিককে স্থানীয় আগদিয়ার চর বাজার থেকে চেয়ারম্যানের লোকজন কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। আশিক এখন ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ভাইকে হামলার পর এখন আমাদের সবাইকে হুমকি
দিচ্ছে। আমি ও আমার ভাই চেয়ারম্যানের ভয়ে মা-বাবাকেও একটু দেখতে যেতে পারছিনা।
বিছালী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস.আই নাজির বলেন, মামলা আদালতের বিষয়। মামলা তার নিজস্ব গতিতে চলবে।চেয়ারম্যানকে কোনো ঝামেলা ফ্যাসাদ করতে নিষেধ করেছি। এখন এসব ব্যাপারে এলাকার লোক যদি কোনো কথা না বলে তাহলে আমরা কি করতে পারি।সদর থানার ওসি মোঃ ইলিয়াছ হোসেন বলেন, আপনি বাদি পক্ষকে আমার কাছে আসতে বলেন, তারপর দেখছি।এ ব্যাপারে সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি উজ্জল শেখ বলেন, রেঞ্জারকে কোনো ভয়, হুমকি বা মারধর করা হয়নি। সে নিজ থেকেই জিডি প্রত্যাহার করেছে। আদালত চত্বরে জিডি করার মতো এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি । সামনে ইউপি নির্বাচন, সেজন্য এসব তার বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্র।নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি খোঁজ-খবর নিয়ে পদক্ষেপ নিচ্ছি।
৭ পরিবারকে হুমকির ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে থানায় জিডি

আরো পড়ুন






