বাংলাদেশের হয়ে প্রথমবারের মতো ফটোগ্রাফির শিক্ষার্থী হিসেবে ফ্রান্সের স্পেওস ফটোগ্রাফিক ইনস্টিটিউটে যাচ্ছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের শিক্ষার্থী ও যশোরের বাঘারপাড়ার সন্তান আরাফাত রহমান।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেস্বর) রাত ১ টায় ফ্রান্সের উদ্দেশ্যে আকাশ পথে রওনা হবেন তিনি।
গেল বছর লকডাউনের মাঝামাঝি সময়ে আরাফাত রহমান নতুন একটি ফটোগ্রাফিক আইডিয়া নিয়ে কাজ করেছিলেন যেটা মূলত তাকে এই প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার সুযোগ করে দিতে সহায়তা করছে। পুরো পৃথিবী স্থবির থাকলেও সব ধরনের কাজই অনলাইনে করাটা স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ফটোগ্রাফি অনলাইনে করাটা এক প্রকার দুরহ ছিল। আরাফাত রহমানের আইডিয়া ছিল প্রথমে ছবির সেট তৈরি করে স্কেচ বানানো। তারপর লাইটিং ও ক্যামেরা এঙ্গেলস ঠিক করে মডেলকে পোজ বুঝিয়ে দেওয়া।
এরপর মডেল সেই অনুযায়ী ক্যামেরা সেট করে নির্ধারিত পোজে ছবিটি তুলে পুনরায় ফটোগ্রাফারের কাছে ফেরত পাঠাবেন। তখন ফটোগ্রাফার ছবিটিকে পুনরায় প্রয়োজনীয় এডিট করে সেটাকে সোশ্যাল মিডিয়া বা নির্ধারিত ওয়েবসাইটে আপলোড করবেন। আরাফাত রহমান লকডাউনে একটি সিরিজ তৈরি করেছিলেন “লকডাউন ডেইজ” শিরোনামে। যে সিরিজে তিনি পাঁচটি দেশের পাঁচজন মডেলের সাথে এই অনলাইন ফটোশ্যুট করেছিলেন।
তিনটি ধাপ পেরিয়ে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তাকে স্পেওসে জায়গা করে নিতে হয়েছে। প্রথম ধাপে তিনি অফিসিয়ালি নির্বাচিত হয়েছেন তার পোর্টফলিও এবং ভিশন উপস্থাপনের মাধ্যমে। পরবর্তীতে তিনি অনলাইনে একটি স্বাক্ষাতকারের মুখোমুখি হয়েছিলেন। পরবর্তীতে ফ্রান্সের একজন কালচারাল অ্যাম্বাসাডর তার সাথে ভার্চুয়ালি সাক্ষাৎ করেন।
এই ‘ইন্টেন্সিভ প্রোফেশনাল ফটোগ্রফি কোর্সের সময়কাল নয়মাস যেটি আগামী ১৮ই জানুয়ারি থেকে শুরু হতে যাচ্ছে এবং কোর্সের স্পনসরশিপ নিয়েছে ‘জে.পি’।
আরাফাত রহমান মূলত “কনসেপচুয়াল ফটোগ্রাফি” নিয়ে কাজ করেন এবং ভবিষ্যতে ফটোগ্রাফির সাহায্যে সমাজের অসংগতি ও গোঁড়ামী দূর করতে চান।
স্পেওস ফটোগ্রাফিক ইনস্টিটিউট পৃথিবীর অন্যতম সেরা ফটোগ্রাফি স্কুল, যেখানে আগামীদিনের সেরা ফটোগ্রাফারদের তৈরি হতে সর্বোচ্চ সহায়ক হিসাবে কাজ করে। এটি ফ্রান্সের প্যারিসে, বিয়ারিৎস (ফ্রান্সের একটি শহর) ও লন্ডনে অবস্থিত। তাদের শিক্ষার্থীদের অনন্য সফলতায় ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠাকৃত স্কুলটি ৩৫ বছরেই বিশ্বের নামকরা সব মিডিয়া ও ম্যাগাজিনে তাদের ভীত পাকাপোক্ত করেছে।
ম্যাগনাম ফটোস, পোলকা, ইনসেপ-এর মতো বাঘা বাঘা টাইফুনদের সাথে এ প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে সম্মিলিত কোর্সও। যার ফলে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাছাই করা মেধাবী শিক্ষার্থীরা প্রতিবছরই স্পেওসে এ পাড়ি জমাতে চায় ফটোগ্রাফি জগতে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করতে। বাংলাদেশ থেকে এর আগে কখনো কেউ এই প্রতিষ্ঠানে যোগদান করার সুযোগ পাননি।
আরাফাত যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার নারিকেলবাড়ীয়া গার্লস স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক মাহবুবর রহমানের ছেলে। তার এই সাফল্যে এলাকাবাসী গর্বিত।
ফটোগ্রাফির শিক্ষার্থী হিসেবে ফ্রান্সের স্পেওস যাচ্ছেন বাঘারপাড়ার আরাফাত

আরো পড়ুন






