Friday, December 5, 2025

লিবিয়ায় সমুদ্রপথে ইতালি যাওয়ার চেষ্টার সময় দালালচক্রের গুলিতে নিহত তিন বাংলাদেশি যুবক

লিবিয়ায় অবৈধভাবে ইতালি যাওয়ার পথে দালালচক্রের গুলিতে তিন বাংলাদেশি যুবক প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতরা হলেন— মাদারীপুর সদর উপজেলার আদিত্যপুর গ্রামের ইমরান খান, রাজৈরের দুর্গাবর্দ্দী গ্রামের মুন্না তালুকদার এবং ঘোষলাকান্দির বায়েজিত শেখ। তাদের মৃত্যুতে পরিবারে চলছে শোকের মাতম, আর স্থানীয়রা দায়ীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, ইমরান খান গত ৮ অক্টোবর বাড়ি থেকে ইতালির উদ্দেশে রওনা দেন। এলাকার দালাল ও প্রতিবেশী শিপন খানের মাধ্যমে ২২ লাখ টাকায় ইতালি পৌঁছে দেওয়ার চুক্তি হয়। পরে লিবিয়ায় আটকে রেখে আরও ১৮ লাখ টাকা আদায় করে দালালচক্র। ১ নভেম্বর লিবিয়া উপকূল থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ইতালির উদ্দেশে যাত্রার সময় ভূমধ্যসাগরে দুর্বৃত্তদের হামলায় ইমরানসহ তিনজন নিহত হন। তাদের মরদেহ সাগরে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সহযাত্রীরা।

একই ঘটনায় প্রাণ হারানো মুন্না তালুকদার ও বায়েজিত শেখের পরিবারও দালালদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন। নিহত মুন্নার খালা খাদিজা আক্তার জানান, দালাল শিপনকে ধারদেনা করে ৪০ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছিল। বায়েজিতের বাবা কুদ্দুস শেখ বলেন, “ছেলেকে পাঠাতে এত টাকা খরচ করলাম, এখন তার লাশটাও দেশে আনতে পারছি না।”

ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর শিপনের বাড়িতে তালা ঝুলছে। তবে শিপনের স্বজনরা দাবি করেছেন, তিনি গুলির ঘটনায় জড়িত নন এবং বর্তমানে লিবিয়াতেই অবস্থান করছেন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, শিপন দীর্ঘদিন ধরে লিবিয়ায় বসে এলাকায় বিভিন্ন যুবককে ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখাতেন। আগেও তার মাধ্যমে বেশ কয়েকজন যুবক প্রাণ হারালেও তিনি আইনঝামেলা এড়িয়ে গেছেন।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, লিবিয়ায় তিন বাংলাদেশির মৃত্যুর বিষয়টি তারা জেনেছেন। পরিবার লিখিত অভিযোগ দিলে দালালচক্রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর