Friday, December 5, 2025

মাটিতে পেঁয়াজের সোনা-ছুরাফ ও আজিজুরের সাফল্যের গল্প

আজম খাঁন , বাঘারপাড়া (যশোর): উচ্চ দামে হাসি ফুটেছে বাঘারপাড়ার কৃষকের মুখে। ঝুঁকি নিতে ভয় পান না কৃষক ছুরাফ শিকদার। নতুন ফসলের পরীক্ষায় বারবারই খুঁজে ফেরেন সাফল্য। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। নিজস্ব পাঁচ শতক জমিতে ‘নাসিক রেড এন–৫৩’ জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন সবাইকে। প্রথম বছরেই ফলন আর দাম— দুই মিলিয়ে জমেছে ভাগ্য। কয়েক দিনের মধ্যে পেঁয়াজ তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। আশা করছেন ৭ থেকে ৯ মন পর্যন্ত ফলন, বাজারে দাম ভালো থাকায় ১৭–১৮ হাজার টাকার বিক্রির আশাও করছেন এই কৃষক। যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার বাসুয়াড়ি ইউনিয়নের মহিরন গ্রামের বাসিন্দা ছুরাফ বলেন, “কৃষি অফিসের পরামর্শে প্রথমবার এই পেঁয়াজ লাগিয়েছি। বীজ ও সারসহ কিছু সহায়তাও পেয়েছি। সবমিলিয়ে খরচ হয়েছে মাত্র সাত হাজার টাকা। এখন ফলন দেখে মনে হচ্ছে, ঝুঁকিটা সার্থক।” শুধু ছুরাফই নন— পাশের জামদিয়া ইউনিয়নের ভিটাবল্লা গ্রামের আজিজুর রহমানও প্রথমবারের মতো গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করে পেয়েছেন চমকপ্রদ ফলন। ৭ শতক জমিতে চাষ করেছেন একই জাতের পেঁয়াজ। তিনি জানান, “অভিজ্ঞতা ছিল না। কৃষি অফিসের নির্দেশনা মেনে করেছি। ফলন আশানুরূপ— অন্তত ১২ থেকে ১৩ মন পেঁয়াজ পাব বলে আশা করছি।” কৃষি অফিসের নজরে নতুন সম্ভাবনা বাঘারপাড়া কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১৫ আগস্টের মধ্যে বীজতলা তৈরি এবং ১৫ অক্টোবরের মধ্যে বীজ বপন সম্পন্ন করতে হয়। এ বছর উপজেলার প্রথম দুই কৃষক হিসেবে ছুরাফ ও আজিজুর গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের আবাদে সফল হয়েছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর এই নতুন চাষ সম্প্রসারণে ইতিমধ্যেই মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করেছে। গত মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর ২০২৫) যশোর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক আলমগীর বিশ্বাস পেঁয়াজক্ষেত পরিদর্শন করেন এবং চাষিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপপরিচালক মোশারফ হোসেন ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইয়েদা নাসরিন জাহান। কৃষি কর্মকর্তার প্রত্যাশা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইয়েদা নাসরিন জাহান বলেন, “গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ তুলনামূলক সংবেদনশীল হলেও অত্যন্ত লাভজনক। কারণ এটি সংরক্ষণের প্রয়োজন পড়ে না। বাজারে যখন দাম বেশি থাকে, তখনই বিক্রি করা যায়।” তিনি আরও বলেন, “বাঘারপাড়ায় সাধারণত শীতকালীন পেঁয়াজই চাষ হয়। এবার নতুন করে গ্রীষ্মকালীন জাতের সফল সূচনা হয়েছে। আগামীতে কৃষকদের আগ্রহ বাড়লে দেশে পেঁয়াজ আমদানি অনেক কমবে, এমনকি ডলার সাশ্রয়ও সম্ভব হবে।”

রাতদিন সংবাদ,জয়-

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর