Friday, December 5, 2025

নড়াইলে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা এনামুল কবির টুকুর গেজেট বাতিল

নড়াইল প্রতিনিধিঃ নড়াইলের ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা এনামুল কবির টুকুর মুক্তিযোদ্ধা গেজেট (গেজেট নম্বর ২৬৪) বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়।

গত ২৬ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব হরিদাস ঠাকুরের স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে (স্মারক নম্বর: ৪৮.০০.০০০০.০০০.০০৪.০৭.০০০৮.২৫.১৫৭৮) টুকুর গেজেট বাতিল করা হয়।

নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পাঁচগ্রাম ইউনিয়নের মহিষখোলা গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিকীর ছেলে টুকু বর্তমানে নড়াইল শহরের কুড়িগ্রাম এলাকায় বসবাস করেন। ২৮ অক্টোবর রাতে বিষয়টি ফেসবুকে ভাইরাল হয়।

বীর মুক্তিযোদ্ধা তবিবর রহমান জানান, দীর্ঘদিন ধরে আমরা আন্দোলন করেছি নড়াইলের সব ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার গেজেট বাতিলের দাবিতে। অবশেষে টুকুসহ চারজনের গেজেট বাতিল হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে সরকারকে অভিনন্দন জানাই। আমরা ভবিষ্যতেও আন্দোলন চালিয়ে যাব বাকি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেট বাতিলের দাবিতে।

নড়াইলের সন্তান ও মার্কিন প্রবাসী নেওয়াজ মাহমুদ ভিকু বলেন, আমি দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা এনামুল কবির টুকুর বিরুদ্ধে আন্দোলন করে যাচ্ছি। পাঁচ বছর পর সাফল্য এসেছে। শুধু টুকু নয়, সব ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেট বাতিলের জন্য লড়াই চালিয়ে যাব।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সুশীল সমাজের একাধিক ব্যক্তি জানান, এনামুল কবির টুকু সাংবাদিকতাকে আড়াল হিসেবে ব্যবহার করে মিথ্যা তথ্য ও জাল কাগজপত্র তৈরি করে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় নেন। পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিকতার সাইনবোর্ড ব্যবহার করে, এবং নড়াইল প্রেসক্লাবের কর্তাব্যক্তি (সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক) পরিচয়ে বিভিন্ন অফিসে ভয়ভীতি দেখিয়ে মাসোহারা আদায় করতেন।

তারা আরও জানান, সামান্য লেখাপড়া জানা সত্ত্বেও টুকু জেলা প্রশাসকের সভায় গিয়ে বিসিএস কর্মকর্তাদের হুমকি দিতেন। নড়াইল প্রেসক্লাবের অডিটে তার ৮০ হাজার টাকা আত্মসাতের বিষয় ধরা পড়লে তা ফেরত দিতে বাধ্য হন। এরপরও তিনি প্রেসক্লাবে বহাল তবিয়তে থেকে তার ‘রামরাজত্ব’ চালিয়ে যান।

টুকুর গেজেট বাতিলের পর সাংবাদিকরা জানান, নড়াইল প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তার সদস্যপদ থাকার কথা নয়।

মুক্তিযোদ্ধা গেজেট বাতিলের বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করে এনামুল কবির টুকু বলেন, আমি আদালতে যাব।

জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তার জাহান বলেন, এনামুল কবির টুকুর বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পর যাচাই-বাছাই ও তদন্ত শেষে রিপোর্ট পাঠানো হয়। এরপর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তার মুক্তিযোদ্ধা গেজেট বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন।

আর কে-০১

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর