এইচ এম শহিদুল ইসলাম, মোরেলগঞ্জ প্রতিনিধি: বাগেরহাটের ঐতিহ্যবাহী মোরেলগঞ্জ সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে শিক্ষক ও কর্মচারী সংকটের কারণে শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। দীর্ঘদিনের সুনামধন্য এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি এখন নানা সংকটে জর্জরিত।
বিদ্যালয়টি ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে ১৯৮৪ সালে জাতীয়করণ হয়। তবে বর্তমানে ১৯টি অনুমোদিত শিক্ষকের পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ৬ জন শিক্ষক। ফলে নিয়মিত পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেমন গণিত ও উচ্চতর গণিত, জীববিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান, ভূগোল, কৃষিশিক্ষা, হিন্দুধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে কোনো শিক্ষক নেই। ফলে শিক্ষার্থীদের অনেককে অন্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট পড়তে হচ্ছে।
অন্যদিকে, কর্মচারীর সাতটি পদের মধ্যে কোনোটি পূর্ণ নয়। উচ্চমান ও নিম্নমান সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিকের পদ ছয় বছর ধরে শূন্য পড়ে আছে। চতুর্থ শ্রেণির পাঁচটি পদও খালি। মাত্র দুইজন মাস্টাররোল কর্মচারীর উপর নির্ভর করেই চলছে প্রশাসনিক কাজ ও পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন,
“চাহিদাপত্র পাঠিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। শিক্ষক-কর্মচারীর অভাবে বিদ্যালয়ের সুনাম মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়েছে। দীর্ঘদিন ভালো ফলাফল ধরে রাখা এই প্রতিষ্ঠান এখন টিকে থাকার লড়াই করছে।”
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এইচ এম শহিদুল ইসলাম বলেন,
“ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখনও কোনো পদ পূরণ হয়নি। শিক্ষক সংকটের কারণে পাঠদান ব্যাহত হওয়ায় বিদ্যালয়ের সুনাম দিন দিন নষ্ট হচ্ছে।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক বলেন,
“বিদ্যালয়ে শিক্ষক না থাকায় মেয়েদের প্রাইভেট পড়াতে হচ্ছে অন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে। তাছাড়া আবাসনের ব্যবস্থা না থাকায় দূরের শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতে আগ্রহ হারাচ্ছে।”
শিক্ষক-কর্মচারী সংকটের কারণে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার প্রতি অনাগ্রহী হয়ে পড়ছে, যা ভবিষ্যতের জন্য উদ্বেগজনক।
শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় সুধীজনরা দ্রুত শূন্যপদ পূরণের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।







