অসিতের বাড়িতে দেখা যায়, আধাপাকা টিনের ঘরে পলিথিন মোড়ানো প্যাকেট থেকে বেরিয়ে এসেছে সাদা মাশরুম। পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছিলেন তিনি। খামারের কাজে স্ত্রী ও ছেলে সাহায্য করে থাকেন।
অসিত বসু বলেন, আমি কৃষক পরিবারের ছেলে। কৃষি অফিসের সহযোগিতায় ঢাকায় ১০ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছি। পরে কৃষি অফিস থেকে চাষের উপকরণ, একটি ঘর, এমনকি মাশরুম দিয়ে চপ তৈরি করে সেগুলো বাজারে বিক্রির জন্য ভ্যান গাড়ি দিয়েছেন। এক মাসের তারুণ্যের মেলায় ১২ থেকে সাড়ে ১২ মন মাশরুমের চপ বিক্রি করেছি দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা। এক থেকে দেড় লাখ টাকা আয় হয়েছে আমার।
অসিতের সাফল্যে উৎসাহী হচ্ছেন অন্যরাও। কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় ওই এলাকায় আরও ৩০ জন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা মাশরুম চাষে আগ্রহী হয়ে কাজ করছেন। স্থানীয় অনেকেই প্রতিদিন খামারে গিয়ে শিখছেন কিভাবে মাশরুম চাষ করতে হয়। এখান থেকে মাশরুম চাষ শিখে অল্প সময়ের মধ্যেই তারা চাষ শুরু করবে। খড়কুটো, কাঠের গুড়া, গমের ভুসি, ক্যালসিয়াম চুন ও পানি মিশিয়ে তৈরি করেন মাশরুম চাষের উপযোগী পরিবেশ। তারপর জীবাণুমুক্ত করে রাখা হয় ল্যাবে, ২৮ দিন পর প্রস্তুত হয় মাদার টিস্যু। সেখান থেকেই জন্ম নেয় এই সুস্বাদু ও পুষ্টিকর মাশরুম।
নড়াইল সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রোকনুজ্জমান বলেন, মাশরুম চাষ সম্পর্কে সম্মুখ ধারণা সেটা তিনি ট্রেনিংয়ে পেয়েছিলেন। সেই অনুযায়ী তিনি মাশরুম চাষ শুরু করেছেন। এখান থেকে যে মাশরুম উৎপাদন করছেন। এই উৎপাদিত মাশরুম তিনি বিভিন্ন শ্রেণীর ভক্তাদের নিকট পৌঁছে দিচ্ছেন। তার দেখাদেখি ওই এলাকার অনেক কৃষক মাশরুম চাষে আগ্রহ আছেন। স্বল্প খরচে এবং স্বল্প ব্যয়ে বাড়ির আশেপাশে অব্যবহৃত জমিতে যদি মাশরুম চাষ করা যায় তারা উপকৃত হতে পারেন। তার সঙ্গে আরও ৩০ জন যারা ছোট ছোট উদ্যোক্তা আছেন। তারা দুইদিনের ট্রেনিংয় নিয়েছেন। তারা একসঙ্গে কাজ করলে ওই এলাকাটা মাশরুম পল্লি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারবে।
তিনি আরও বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে তাদেরকে সব সময় আমরা কারিগরি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। মাশরুম একটি পুষ্টিকর ও সুপার ফুট। যা সারা বিশ্বে বহুলভাবে পরিচিত। আমরা চাই মাশরুমের এই পুষ্টিকে কাজে লাগিয়ে পারিবারিক পুষ্টি উন্নয়নে সফলতা আমরা আনতে চাই।







