যশোর সদর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের ডাকাতিয়া গ্রামে বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) দিনভর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় এক যুবক নিহত হয়েছেন। একই ঘটনায় নিহতের পরিবারের সদস্যসহ অন্তত অর্ধডজন আহত হয়েছেন। রাতে উত্তেজিত জনতা প্রধান আসামির বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে ডাকাতিয়া গ্রামের মধু গাজীর ছেলে চঞ্চল মাহমুদের (২৮) ইজিবাইক চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় একটি চোর সিন্ডিকেট সক্রিয় ছিল, যার নেতৃত্বে ছিলেন রবিউল ইসলাম।
ইজিবাইক ফেরত চাওয়াকে কেন্দ্র করে ক্ষিপ্ত হয়ে রবিউল ও তার সহযোগীরা মধু গাজীর বাড়িতে হামলা চালায়। এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয় চঞ্চলকে। তাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে তার বাবা মধু গাজী, মা হাসিনা বেগম ও ছোট ভাই তুহিনকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয়।
রক্তাক্ত অবস্থায় সবাইকে স্থানীয়রা যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক চঞ্চল মাহমুদকে মৃত ঘোষণা করেন। তার বাবা মধু গাজীর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। মা ও ছোট ভাইও গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন।
ঘটনার খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশ, জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এ ঘটনায় প্রধান আসামি রবিউল ইসলামসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
সকাল থেকে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় দুপুরের দিকে দুই পক্ষের মধ্যে আবারও সংঘর্ষ বাঁধে। মাদক ব্যবসা ও চোরাই কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে পুরনো বিরোধের জেরে লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে অন্তত আরও কয়েকজন আহত হন। নিহত চঞ্চল গাজীর মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোক ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
রাত ৮টার দিকে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর ৪০-৫০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি প্রধান আসামি রবিউল ইসলামের পাকা বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। খবর পেয়ে শানতলা ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
যশোর কোতোয়ালি থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) মোমিন বলেন, “ঘটনার পর এলাকায় টহল জোরদার করা হয়েছে। আটক তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং পলাতক অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।”







