নেপথ্যে সমালোচিত নাজির বিপ্লব আহমেদ
যশোরে আবারও এফিডেভিট বাণিজ্য শুরু হয়েছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এর নেপথ্যে রয়েছেন নাজির বিপ্লব আহমেদ। গত রোববার থেকে তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করার পরই প্রতিটি এফিডেভিটের জন্য ২০০ টাকা করে আদায় শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন আইনজীবী ও তাদের সহকারীরা। মাত্র তিন দিনের মধ্যেই তারা এ নিয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন।
এর আগে বিপ্লব আহমেদ এফিডেভিটের দায়িত্বে থাকাকালে একইভাবে টাকা নিতেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তার কাছ থেকে দায়িত্ব সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। তবে সম্প্রতি আবারও দায়িত্ব পেয়ে তিনি একই পথে হাঁটছেন বলে সমালোচনা চলছে।
আদালত সূত্র জানায়, এফিডেভিট হলো সত্য তথ্যের শপথনামা। আইনজীবীর মাধ্যমে নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে লেখা বক্তব্য বিচারকের সামনে শপথ নিয়ে বৈধ করা হয়। বিচারকের স্বাক্ষরের পর সেটি বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা যায়।
বর্তমানে যশোর জেলার আটটি উপজেলার এফিডেভিটের দায়িত্ব নাজির বিপ্লব আহমেদের হাতে। আবেদন গ্রহণ, বিচারকের স্বাক্ষর গ্রহণে সহযোগিতা ও চূড়ান্ত এফিডেভিট প্রদান—সবই হচ্ছে তার মাধ্যমে। তাকে সহযোগিতা করছেন রুহুল আমিন, শাহাবুদ্দিন ও মেহেদী।
আইনজীবী ও সহযোগীদের অভিযোগ, এর আগে প্রশাসনিক কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামের অধীনে দায়িত্ব পালন করতেন রাসেল পারভেজ ও ইমরান হামিদ পরশ। তাদের সময়ে কোনো টাকা দিতে হতো না। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার থেকে বিপ্লব আহমেদ দায়িত্ব নেওয়ার পর রবিবার থেকেই প্রতি এফিডেভিটে ২০০ টাকা করে আদায় শুরু করেন।
আইনজীবীরা অভিযোগ করেছেন, নির্ধারিত টাকা না দিলে বিপ্লব আহমেদ ফরম আটকে রাখছেন। প্রতিবাদ জানালে আইনজীবীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছেন তিনি। প্রতিদিন যশোর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গড়ে ৩০ থেকে ৪০টি এফিডেভিট সম্পন্ন হয়। সেই হিসেবে প্রতিদিন ৬ থেকে ৮ হাজার টাকা উৎকোচ নিচ্ছে এই চক্র।
যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবু মোর্তজা ছোট জানান, একাধিক আইনজীবী তাকে ফোন করে নাজির বিপ্লবের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে আইনজীবীদের পক্ষ থেকে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
অভিযোগ অস্বীকার করে নাজির বিপ্লব আহমেদ বলেন, তিনি আইনজীবীদের কাছ থেকে কোনো টাকা নেননি। কেউ খুশি হয়ে দিলে সেটি গ্রহণ করেন। আইনজীবীরা ইচ্ছাকৃতভাবে তার বিরুদ্ধে মনগড়া অভিযোগ করছেন বলেও দাবি করেন তিনি।







