কপিলমুনি (খুলনা) প্রতিনিধিঃ পাইকগাছার কপিলমুনি ইউনিয়নের কাশিমনগর হাটে প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সদ্য নির্মিত দ্বি-তল বিশিষ্ট গ্রামীণ বাজার ভবনটিতে হস্তান্তরের আগেই বিভিন্ন স্থানে ফাঁটল ধরেছে। খসে পড়েছে পলেস্তরা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত মেয়াদে কাজটি বাস্তবায়ন করতে না পারায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে ভবনটি এখনো হস্তান্তর করা হয়নি, যদিও সর্বশেষ শুরু হয়েছে হস্তান্তর প্রক্রিয়া।
এমন অবস্থায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে তড়িঘড়ি করে রং-তুলি দিয়ে ফাঁটল ঢাকার অপচেষ্টা চলছে। তবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ দাবি করছে— এসব ফাঁটল তেমন কোনো বিষয় নয়।
সর্বশেষ হস্তান্তর প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গত সোমবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহেরা নানজমীন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইফতেখার আলম শামীম এবং উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাফিন শোয়েবসহ একটি প্রতিনিধি দল মার্কেটটি পরিদর্শন করেন। এ সময় স্থানীয় সাংবাদিক ও জনপ্রতিনিধিরা ভবনটির নানা অসংগতির বিষয় তুলে ধরেন। কিন্তু ইউএনও কৌশলে বিষয়গুলো এড়িয়ে যান। উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী সজল কুমার বিশ্বাস বলেন, ওসব ফাঁটল কোনো ব্যাপার নয়, দেখতে হবে ভবনের মূল কাঠামোয় ফাঁটল ধরেছে কি না।
জানা যায়, দেশব্যাপী গ্রামীণ হাটগুলোকে আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে ‘গ্রামীণ বাজার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প’-এর আওতায় কৃষকের উৎপাদিত পণ্য সংরক্ষণ ও বাজারসুবিধা বাড়ানো, গ্রামীণ ব্যবসার পরিবেশ ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অর্থায়নে ২০২১ সালের দিকে (সিআরএমআইপি) প্রকল্পের আওতায় ২ কোটি ৯২ লাখ ৪৬ হাজার ৯৭৬ টাকা ব্যয়ে চারতলা ফাউন্ডেশনের ওপর একটি দ্বি-তল বিশিষ্ট গ্রামীণ মার্কেট ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
গত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করে শম্ভুকগতিতে কাজ চালায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। ফলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারায় হস্তান্তর প্রক্রিয়াও বিলম্বিত হয়। যদিও চলতি বছর কাজ শেষ করলেও নির্মাণ সমাপ্তির সাল হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ২০২২।
সর্বশেষ গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রমের মধ্যে শুরু হয়েছে হস্তান্তর প্রক্রিয়া। ঠিক এমন সময়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দ্বিতীয় দফায় ভবনের ফাঁটলের পুটিং ও খসে পড়া পলেস্তরা ঢাকতে নতুন করে রং করেছে। তবে তাতেও সব ফাঁটল ঢাকতে সক্ষম হয়নি।
এদিকে ভবনের ঠিক পেছন দিয়ে প্রবাহিত কপোতাক্ষ নদের ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভবনসহ স্থানীয় হাট-বাজার ও ধর্মীয় স্থাপনাগুলোর স্থায়ী সুরক্ষায় ভাঙনরোধে ব্যবস্থা না নেওয়ার পাশাপাশি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ফাঁটলযুক্ত ঝুঁকিপূর্ণ ভবন গ্রহণকে ভালো চোখে দেখছেন না স্থানীয়রা। এ বিষয়ে তারা সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
আর কে-০৮







