জুম্মান হোসেন ও সাকিব হাসান: যশোরে লালদীঘির জলে একে একে ভাসছে প্রতিমা। চলছে নিরঞ্জনের শেষ আনুষ্ঠানিকতা। ইতোমধ্যে আলোচনা সভা শেষ হয়েছে। বিভিন্ন পূজা মণ্ডপ থেকে ঢাক–ঢোল বাজিয়ে প্রতিমা এসে জমা হচ্ছে লালদীঘির পাড়ে। বিদায়ের আবেগ আর উৎসবের আমেজে একাকার হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা।
সন্ধ্যার পর প্রতিমা নিরঞ্জন অনুষ্ঠানের আলো চনা সভায় অংশ নেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। তিনি বলেন, ২০০৪ সালে তাঁর প্রয়াত পিতা সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলাম লালদীঘিতে নিরঞ্জন অনুষ্ঠান আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করেছিলেন। ২১ বছরের ব্যবধানে আজ তা উৎসবে পরিণত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই একসাথে বেড়ে উঠেছে। অতীতে ধর্মীয় উৎসব নিয়ে শঙ্কা থাকলেও এখন পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটেছে। যশোরে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ১৬৫টি পূজা মণ্ডপে কাজ করেছে, যাতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নির্বিঘ্নে দুর্গোৎসব পালন করতে পারেন। একইসঙ্গে তিনি ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভেদাভেদ ভুলে নতুন বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপঙ্কর দাস রতন ও সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার ঘোষ, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, পৌর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম চৌধুরি মুল্লুক চাঁন ও বিএনপি নেতা হাজী আনিছুর রহমান মুকুল।
জানা গেছে, এ বছর যশোর জেলার মোট ৭০৮টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে যশোর সদরে ১৬৫টি, অভয়নগরে ১২৭টি, কেশবপুরে ৯৮টি, মণিরামপুরে ৯৬টি, বাঘারপাড়ায় ৯১টি, ঝিকরগাছায় ৫৪টি, চৌগাছায় ৪৮টি এবং শার্শা উপজেলায় ২৯টি পূজামণ্ডপ ছিল। শারদীয় উৎসবকে ঘিরে নেওয়া হয়েছিল পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মাঠ পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সেনাবাহিনীও মোতায়েন ছিল।
শাস্ত্র মতে, এ বছর দেবী দুর্গার আগমন হয়েছে গজে (হাতির পিঠে), আর বিজয়া দশমীতে তিনি বিদায় নিচ্ছেন দোলায় (পালকিতে চড়ে)। প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়েই আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হবে এবারের শারদীয় দুর্গোৎসব।







