যশোরের রাজারহাট রেলক্রসিং এলাকায় পুলিশ পরিচয়ে সংঘটিত সংঘবদ্ধ ডাকাতির ঘটনায় স্বর্ণালংকার, হ্যান্ডকাপ, ওয়াকি-টকি ও প্রাইভেটকারসহ চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। থানা ও ডিবির বিশেষ টিম শনিবার রাত সাড়ে সাতটার পর থেকে শুরু করে মধ্যরাত পর্যন্ত ঢাকা ও যশোর শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে। এর আগে গত ১৪ জুলাই সকাল আটটার পর রাজারহাট রেলক্রসিং এলাকায় ২/৩ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি পুলিশ পরিচয়ে একটি প্রাইভেটকার থামিয়ে ১৯ ভরি ৮ আনা স্বর্ণালংকার, নগদ ২৬,০০০ টাকা এবং চারটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়।
আটককৃতরা হলেন, শহরের ষষ্ঠীতলা এলাকার ফরিদ হোসেনের ছেলে নিশান হোসেন, শার্শা উপজেলার গোগা গাজিপাড়ার আবুল কাশেমের ছেলে উজ্জল হোসেন, যশোরের খড়কির মৃত সোলেমান শেখের ছেলে রতন শেখ এবং পুলেরহাটি কৃষ্ণবাটি গ্রামের মুসাব্বির হোসেন টুটুল।
পুলিশ জানায়, সাতক্ষীরার এসডি জুয়েলার্সের মালিক পলাশপোল গ্রামের সুধীর কুমার দাসের শ্যালক আনন্দ বসু ও দোকানের কর্মচারী মো. রাসেল গাজী যশোর থেকে সোনা কিনে সাতক্ষীরায় যাচ্ছিলেন। এমন সময় দুর্বৃত্তরা তাদের প্রাইভেটকার থামিয়ে নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে জিম্মি করে ফেলে। এরপর সোনা নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। অন্যদিকে, তাদের হাতকড়া পরিয়ে চোখ বেঁধে মনিরামপুর ট্যাংরাখালী এলাকার একটি ফাঁকা জায়গায় ফেলে রেখে যায়। এ ঘটনায় ১৫ জুলাই কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়। বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে থানা ও ডিবি পুলিশ। এক পর্যায়ে ২০ সেপ্টেম্বর রাত সাতটার পর ঢাকার তাঁতীবাজারস্থ হাজী মার্কেটের ৩য় তলার পাশের সিঁড়ি থেকে অভিযান চালিয়ে প্রধান দুই আসামি উজ্জল হোসেন ও নিশান হোসেনকে আটক করা হয় । তাদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত স্বর্ণালংকার গলিয়ে রূপান্তরিত ৫ ভরি ১১ আনা গিনি সোনা উদ্ধার করা হয়। আসামিদের দেওয়া তথ্যে অপর দুই সহযোগীকে একই দিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে যশোরের চাঁচড়া মোড়ের আকিজ পেট্রোল পাম্পের সামনে থেকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে এক জোড়া স্টিলের হ্যান্ডকাপ, দুইটি কালো রঙের ওয়াকি-টকি এবং একটি প্রাইভেটকার জব্দ করা হয়।
পুলিশ আরও জানায়, আটক নিশান হোসেনের বিরুদ্ধে খুন, ডাকাতি, ধর্ষণ ও অস্ত্র আইনে মোট ১৮টি মামলা এবং উজ্জল হোসেনের বিরুদ্ধে ৪টি মামলা রয়েছে। তারা দু’জনই এলাকার চিহ্নিত ডাকাত ও সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত। রোববার তাদের আদালতে সোপর্দ করলে উজ্জল ও রতন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। বিচারক শান্তনু কুমার মণ্ডল তাদের জবানবন্দি গ্রহণ শেষে চারজনকেই কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। একই দিন নিশান ও টুটুলকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির এসআই অলক কুমার দে।







