Saturday, December 6, 2025

যশোরে বিচারকের প্রতি আইনজীবীদের অনাস্থা, আদালত বর্জনের আল্টিমেটাম

যশোরের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রাশেদুর রহমানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করেছেন আইনজীবীরা। তাদের অভিযোগ, তিনি বিচারিক কার্যক্রমে খেয়াল খুশিমতো সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন এবং রায়ের ক্ষেত্রে নির্ধারিত রীতিনীতি উপেক্ষা করছেন। এতে ন্যায়বিচার ব্যাহত হচ্ছে বলে দাবি আইনজীবীদের। প্রায় ২০০ আইনজীবী এই বিষয়ে লিখিতভাবে যশোর জেলা আইনজীবী সমিতিকে অবহিত করেছেন। সমিতি থেকেও জেলা ও দায়রা জজকে অবহিত করা হয়। কিন্তু কোনো প্রতিকার মেলেনা। এই পরিস্থিতিতে গত বুধবার আইনজীবী সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় বিচারকের আদালত বর্জনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং পরদিন বৃহস্পতিবার ১৮ সেেেপ্টম্বর জরুরি সাধারণ সভা আহ্বানের মাধ্যমে তা বাস্তবায়নের প্রস্তুতি চলছিল। ঠিক সে সময় বিষয়টি অবগত হন ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো: সালেহুজ্জামান। পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করে ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ তিনি উভয় পক্ষকে আলোচনার টেবিলে আনেন। তার আমন্ত্রণে উপস্থিত ছিলেন আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবু মোর্ত্তজা ছোট, সাধারণ সম্পাদক এম.এ. গফুর, সাবেক সভাপতি দেবাশীষ দাস, কাজী ফরিদুল ইসলাম, সিনিয়র আইনজীবী মঈনুল হক ময়না, এপিপি নুরে আলম পান্নু এবং সংশ্লিষ্ট বিচারক রাশেদুর রহমান নিজেও।
আলোচনায় আইনজীবীরা বিচারকের বিচারকার্যে নানা ত্রুটির বিষয় তুলে ধরেন। তারা বলেন, বিচারক রাশেদুর রহমান আদালতে শৃঙ্খলা ও পেশাদারিত্ব বজায় রাখার ক্ষেত্রে ব্যর্থ হচ্ছেন। তারা দাবি করেন, বিচারক রাশেদুর রহমান বার ও বেঞ্চের সঙ্গে সমন্বয়হীনভাবে কাজ করছেন, আইনজীবীদের অবমূল্যায়ন করছেন এবং কখনো কখনো আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই একতরফাভাবে রায় ঘোষণা করছেন। এতে বিচারপ্রার্থীদের মাঝে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে এবং আইনজীবী-মক্কেল সম্পর্কেও টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে। এ সময় বিচারক নিজেও নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন এবং ভবিষ্যতে সতর্কতার সঙ্গে কাজ করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। সেই সঙ্গে বার ও বেঞ্চের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ার আশ্বাস দেন।
পরে আইনজীবী সমিতির পূর্ব ঘোষিত জরুরি সাধারণ সভায় আলোচনার সারসংক্ষেপ তুলে ধরা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সমিতির সভাপতি আবু মোর্ত্তজা ছোট। বক্তব্য রাখেন সাবেক সভাপতি দেবাশীষ দাস ও সাধারণ সম্পাদক এম.এ. গফুর ।
সভায় দাবি পূরণ না হলে রাশেদুর রহমানের আদালত বর্জনের ঘোষণায় আইনজীবীরা ফিরে যাবেন বলে জানানো হয়।
এ বিষয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম.এ গফুর নিশ্চিত করে বলেন, জরুরী সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়েছে চার কার্যদিবস তারা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করবেন। যদি কথা না রাখা হয় তাহলে রাশেদুর রহমানের আদালত বর্জনের ঘোষনা দেয়া হবে। এছাড়া আরও তিন বিচারকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আনা হয়। তাদের আদালতও বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে।
উল্লেখ্য, বিচারক রাশেদুর রহমানের বিরুদ্ধে আইনজীবীরা নানা অভিযোগ করলেও তাদের দাবি তিনি অসৎ না।

বিশেষ প্রতিনিধি

আরো পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

এই বিভাগের আরো খবর