সরকার ডাক বিভাগের ডিজিটাল আর্থিক সেবা ‘নগদ’–এর জন্য কৌশলগত অংশীদার খুঁজছে। নতুন বিনিয়োগ ও মালিকানায় অংশীদারিত্বের মাধ্যমে নগদকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যেতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্নের জন্য একটি অভিজ্ঞ আর্থিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করতে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করেছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)।
বিডা ৩১ আগস্ট এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে আগ্রহপত্র আহ্বান করেছে। টার্মস অব রেফারেন্সে (টিওআর) বলা হয়েছে, ডাক বিভাগের অধীনে পরিচালিত হলেও গত চার বছরে নগদের ব্যবস্থাপনায় তেমন অগ্রগতি হয়নি। আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণের জন্য নতুন প্রযুক্তি ও বৈদেশিক মুদ্রার জোগান প্রয়োজন। এজন্য আন্তর্জাতিক মানের দক্ষতাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিনিয়োগকারীদের সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
প্রকাশিত টিওআর অনুযায়ী, সরকার নগদের বেশির ভাগ শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে একজন কৌশলগত অংশীদার খুঁজছে। ডাক বিভাগের সূত্র জানায়, গত সপ্তাহে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় নগদকে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এরপরই বিডার কাছে এই প্রক্রিয়া সম্পন্নের জন্য অনুরোধ করা হয়।
নগদের বর্তমান অবস্থা
-
মোট গ্রাহকসংখ্যা ৯ কোটির বেশি, নিয়মিত গ্রাহক ১ কোটির ওপরে
-
দৈনিক গড় লেনদেন প্রায় ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা
-
গ্রাহকের সঞ্চয় প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা
-
সরকারের প্রায় ১ লাখ কোটি টাকার সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বড় অংশ নগদের মাধ্যমে বিতরণ হয়
নগদ বর্তমানে লাভজনকভাবে পরিচালিত হলেও অতীত প্রশাসনিক অনিয়ম ও বড় অঙ্কের জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে। গত বছরের ৫ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার নগদে প্রশাসক নিয়োগ দেয়। পরে নিরীক্ষায় ভুয়া পরিবেশক ও অতিরিক্ত ই–মানি সৃষ্টির মতো জালিয়াতির তথ্য উঠে আসে। ২ হাজার ৩৫৬ কোটি টাকার হিসাবের অমিলসহ এসব ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংক ২৪ জনকে আসামি করে মামলা করেছে।
আর্থিক পরামর্শকের কাজ
নিয়োগপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানটি নগদের বাজারমূল্য নির্ধারণ, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পদ্ধতিতে মূল্যায়ন, সম্ভাব্য দেশি–বিদেশি বিনিয়োগকারী চিহ্নিতকরণ, শেয়ারহোল্ডিং কাঠামো ও লেনদেনের শর্তাবলি নিয়ে পরামর্শ এবং দর–কষাকষি থেকে শুরু করে চুক্তি চূড়ান্তকরণ পর্যন্ত পুরো প্রকল্প ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করবে।
আবেদন প্রক্রিয়া
১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রস্তাব জমা দিতে হবে। আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানের ফিনটেক, টেলিকম বা মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস খাতে বড় আকারের কৌশলগত লেনদেন পরিচালনার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। যাচাই–বাছাইয়ের পর সংক্ষিপ্ত তালিকা করে পরবর্তী ধাপে তাদের কাছ থেকে চূড়ান্ত প্রস্তাব নেওয়া হবে। তিন মাসের মধ্যে পুরো নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ করার লক্ষ্য রয়েছে।







