যশোর সদর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের পূর্ব চাঁদপাড়ায় আওয়ামী লীগ নেতা ফিরোজ হোসেন (৩৮) অনৈতিক কাজে হাতেনাতে ধরা পড়েছেন। ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার (২৯ আগস্ট) রাত ২টার দিকে। স্থানীয়দের দাবি তাদেরকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। তবে, বিষয়টি ওই নারী এবং ফিরোজের পরিবার গোপন করার চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু শনিবার সন্ধার পর থেকে তা জানাজানি হয়ে যায়। যদিও পুলিশ বলছে কিছুই জানেন না।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফিরোজ হোসেন দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তিনি এক নারীর কক্ষে প্রবেশ করলে বিষয়টি স্থানীয়দের চোখে পড়ে। পরে এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে বাড়িটি তল্লাশি করে। এসময় ফিরোজ একটি রুমে ঢুকে দরজা আটকে দেন। কিছুক্ষণ পর দরজা খোলার সাথে সাথেই অনৈতিক কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগে তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলে এলাকাবাসী।
পরে ক্ষুব্ধ জনতা তাকে গণধোলাই দেয়। এসময় কেউ কেউ তার গলায় রশি পেঁচিয়ে নির্যাতন চালায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত অনেকে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করেন। পরে ওই নারীর স্বজনরা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ফিরোজসহ ওই নারীকে থানায় নিয়ে যায়। তবে এরপর থেকে তাদের আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে ফতেপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড সদস্য আখতার হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। তবে উপস্থিত লোকজন বিষয়টি তাকে জানিয়েছেন। মুলত ওই নারীর এক ছেলেই পুলিশে খবর দিয়েছিলো। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি দেখে দুইজনকেই নিয়ে যায়। তবে, বর্তমানে তাদের অবস্থা সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করেন।
স্থানীয় সূত্রগুলোর দাবি, ফিরোজ হোসেন দীর্ঘদিন ধরে চাঁদপাড়া, বাঁলেখাল ও বাউলিয়া এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে অপরাধের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন। আওয়ামী লীগের পরিচয় ব্যবহার করে তিনি একাধিক সিন্ডিকেট পরিচালনা করতেন। অভিযোগ রয়েছে, চাঁদাবাজি, ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডে তার সম্পৃক্ততা প্রকাশ্যেই ছিল। স্থানীয়দের ভাষায়, তিনি পুরো ইউনিয়নজুড়ে এক আতঙ্কের নাম ছিলেন। ঘটনার পর এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। চায়ের দোকান থেকে পাড়া-মহল্লা সবখানেই ফিরোজের এ কাণ্ড নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। তবে, পুলিশের পক্ষথেকে জানানো হয়েছে তারা কিছুই জানেন না।
এ বিষয়ে চাঁদপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওহিদুজ্জামান জানান, তিনি বর্তমানে ছুটিতে আছেন।
কোতোয়ালি থানার ওসি তদন্ত কাজী বাবুল বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই।
একই থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল হাসনাত জানান, এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। তিনি কিছুই জানেন না, তবে, খোজ নিচ্ছেন।
রাত সাড়ে ১২টার পর যশোর জেনারেল হাসপাতাল, রেলরোডের পক্ষ হাসপাতাল ও জেল রোডের পঙ্গু সেবা হাসপাতালে খোঁজ নিয়েও ফিরোজ হোসেনের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
বিশেষ প্রতিনিধি







